রাজার গায়ের কাপড় নাই কেউ বলে না কেন
"Everyone appreciates your honesty, until you're honest with them. Then you're an asshole" - George Carlin
"মঙ্গল করো যতদিন তুমি থাকো এই দুনিয়ায়।
এখানে ওখানে কিছুই থাকে না, কথা শুধু থেকে যায়।।"
রহিম, ভাষান্তর কুমার রাণা।
ফিটনেস -
২০১১ সালে জার্নাল অবেসিটিতে প্রকাশিত রিসার্চে দেখা গেছে এক অদ্ভুত তথ্য।
দুই গ্রুপ লোক একই পরিমাণ কার্ব, প্রোটিন, ক্যালরি, ফ্যাট খেলেন। একদল খেলেন সারাদিনে। আরেকদল খেলেন কেবল রাতে।
দেখা গেল, যারা রাতে খেয়েছিলেন, তাদের বেশি ফ্যাট বার্ন হয়েছে। তারা কম ক্ষুধার্ত অনুভব করেছেন, খাবারের প্রতি ক্র্যাভিং/টান ফিল কম ছিল তাদের ও তারা বেশি স্যাটিসফাইড ফিল করেছেন।
এই রিসার্চ থেকে, এক ডায়েট প্রোগ্রামে বলা হয়, আপনি যেসব মুখরোচক কার্ব নিয়মিত খেয়ে থাকেন, তা হঠাত করে যদি বাদ দিয়ে দেন, তাহলে কিছুদিন অনেক কষ্ঠে মেনে চলতে পারবেন, হয়ত। কিন্তু ক্ষুধা বেড়ে যাবে, এবং শারীরিক দূর্বলতা দেখা যাবে, ও কর্মক্ষমতা কমে যেতে পারে, মেটাবোলিজম ও ইমিউন সিস্টেমের জন্য খারাপ। এইসব কারণে, কয়দিন মেনে চলেই ব্যক্তি আরও বেশি কার্ব খেতে থাকেন। এজন্য দেখা যায় যারা ডায়েট করেন তাদের মাত্র ২% মেনে চলতে পারেন, বেশিরভাগেরই আরও বেশি ওয়েট গেইন হয়।
পক্ষান্তরে, আপনি যদি আপনার পছন্দের কার্ব রাতে খান ও দিনে না খান তথা ডায়েট করেন, তাহলে দিনে আপনি স্যাটিসফাইড ফিল করবেন, ক্ষুধা কম লাগবে ও ক্র্যাভিং কম হবে।
আপনি কী পরিমাণ কার্ব খাবেন তা ম্যানেজ করাই ওয়েট লসের কার্যকরী এবং স্থায়ী উপায়। এবং রাতে এই কার্ব নেয়াটা একটা ট্রিক যা কাজে দিতে পারে।
এই ডায়েট প্রোগ্রামের নাম হাফ ডে ডায়েট। এটার প্রবক্তা নিউট্রিশন কোচ ও ট্রেইনার নেট মিয়াকি।
—
নেট মিয়াকির নিউট্রিশন নিয়ে স্বাক্ষাতকার।
—
অপেনসোর্স অলটারনেটিভ টুলস নিয়ে একটা দরকারী ওয়েবসাইট।
-
---
অনেক সময় মানুষেরা ভাবে যে কেবল সেই ব্যতিক্রম চিন্তা করছে, সে অন্য সবার থেকে আলাদা।
সবাই এই রকম ভাবে, এবং নিজে "ব্যতিক্রম" প্রকাশিত হয়ে যাবে এই ভয়ে কিছু বলে না।
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, তারা সবাই মনে মনে এমন ভাবছে।
যেমন, ক্লাসে বা মিটিং এ প্রশ্ন করা হল, আপনাদের কি কোন প্রশ্ন আছে?
উপস্থিত ব্যক্তিরা সবারই প্রশ্ন আছে, সবাই কনফিউশনে, কিন্তু তারা ভাববে অন্যরা হয়ত বুঝে গেছে এবং সেই একমাত্র বুঝে নাই, এইজন্য সে কোন প্রশ্ন করবে না। সবাই এইভাবে ভাবছে তাই সবার প্রশ্ন থাকলেও কেউ প্রশ্ন করবে না।
কোন সোসাইটাল নর্ম বা ট্রেন্ডের ক্ষেত্রে, মানুষ এটা ভেতরে অপছন্দ করতে পারে, কিন্তু মনে করে অন্য সবাই যেহেতু করছে হয়ত পছন্দ/বিশ্বাস করেই করছে। ফলে সেও নর্ম বা ট্রেন্ড মানতে থাকে।
সবাই এইরকম করতে থাকলে, দেখা যাবে তারা সবাই ভেতরে ভেতরে ঐ নর্ম/ট্রেন্ড অপছন্দ করে, কিন্তু করে যাচ্ছে, বাইরে দেখাচ্ছে পছন্দ করে।
রূপকথার গল্পের সেই রাজার কথা এখানে বলা যায়। যার গায়ে কোন কাপড় ছিল না। কিন্তু কোন লোক বলতে পারে নাই রাজার গায়ে কাপড় নাই।
একটা ব্যাখ্যা, রাজার ভয়ে বলে নাই।
কিন্তু আরেক ব্যাখ্যা হতে পারে, সবাই বুঝছে রাজার গায়ে কাপড় নাই। কিন্তু মনে করছে অন্য সবাই কাপড় দেখছে, সে কেবল দেখতে পাচ্ছে না, এটা হয়ত তার সমস্যা। তাই সে চুপ থেকেছে, এবং সবাই একই ভাবনায় চুপ থেকেছে।
ভয়ের ব্যাখ্যার ক্ষেত্রেও বলা যায়, সবাই ভাবছে অন্য সবাই রাজার ভয়ে চুপ থাকছে, তাই সেও চুপ থেকেছে, ফলশ্রুতিতে সবাই চুপ থাকছে।
—
কোন কোন ক্ষেত্রে বলা হয় অমুক ব্যক্তি অমুকের জন্য লাকি। তার সাথে বিয়ে বা প্রেম হবার পর অমুকের উন্নতি হচ্ছে। বা অমুক বাচ্চার জন্মের পর মা বাপের উন্নতি হয়েছে ইত্যাদি।
এগুলি শুনতে তো ভালোই, মনে হয় ঐ ব্যক্তি বা বাচ্চাকে সম্মান দেয়া হচ্ছে।
যদিও বৈজ্ঞানিক ভাবে এর ভিত্তি নেই, কিন্তু এই বৈজ্ঞানিক প্রশ্নে না গেলেও এর আরেক এথিক্যাল সমস্যা আছে।
একইভাবে কোন বাচ্চার জন্মের পর, বা কোন মেয়ে বউ হয়ে আসার পর কোন পরিবারে ব্যাড ঘটনা ঘটতে পারে, অর্থনৈতিক লস হতে পারে। সেক্ষেত্রে তারে কী বলা হয়? অপয়া, অলক্ষ্মী। এবং এই যে তারে অলক্ষ্মী বলা হচ্ছে তা ঐ যে আগে আপনি কিছু লোকরে অযৌক্তিক ভাবে লক্ষ্মী বানিয়ে দিছিলেন এ জন্য।
আপনি গুড ঘটনায় কাকতালীয় হিসাবে জড়িত কাউকে লক্ষ্মী না বানালে, একইভাবে ব্যাড ঘটনায় জড়িত কাউকে অলক্ষ্মী বলার অবকাশ থাকত না।
—
—
ধরা যাক আপনি ওই সময়ে আছেন যখন গাড়ি আবিষ্কার হয় নি। সেই সময় থেকে আপনি ২০২১ সালের সমাজ সম্পর্কে বিভিন্ন প্রেডিকশন করতে চাচ্ছেন। তাহলে অবশ্যই আপনাকে গাড়ি সম্পর্কে জানতে হবে, বিশেষত যোগাযোগ বিষয়ক কোন প্রেডিকশন করতে গেলে।
কিন্তু আপনি তখন ওই সময়ে বাস করছেন যখন গাড়ি আবিষ্কারই হয় নি। সেই সময় থেকে ২০২১ সালের সমাজ নিয়ে প্রেডিকশন যদি আপনি ঠিকঠাক করতে পারেন, তাহলে গাড়ি সম্পর্কেও ওই সময় আপনি বুঝে গেছেন বা আপনার বুঝতে হবে। আর যেহেতু বুঝে গেছেন ঐ প্রযুক্তি, তাহলে ঐ সময়েই ঐটা আবিষ্কৃত হয়ে গেছে।
এই কারণে, আমরা জানি না ভবিষ্যতে আমরা কী জানব। কারণ ২০৮০ সালে কী প্রযুক্তি সমাজে থাকবে তা আমরা জানি না, ফলে ওই সমাজ নিয়ে প্রেডিক্ট করা সম্ভব না।
—