কখনো কখনো শব্দের ভিতরে লুক্কায়িত থাকে অনেক মজার তথ্য। যেহেতু এই শব্দগুলো মানুষের ব্যবহারের ফলেই বর্তমান রূপ ধারণ করেছে ফলে এর উৎপত্তি বা ভিতরের অর্থ জানলে তা ব্যবহার করে আসা মানুষদের প্রকৃতি বুঝতে সুবিধা হয়। আর বলাবাহুল্য, যারা বাংলা শব্দ ব্যবহার করেন, এইসব মানুষেরা আমাদের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
একটি শব্দ “যোগাযোগ” যা আমরা ব্যবহার করি। এর সন্ধি বিচ্ছেদ যোগ + অযোগ = যোগাযোগ।
এর আলাদা অংশগুলোর অর্থ
যোগ – তারা অনুকূলে আছে
অযোগ – তারা অনুকূলে নেই
এখানে তারা মানে তারকা। জ্যোতিষশাস্ত্রীয় ব্যাপার। অর্থাৎ যোগাযোগ মানে তারা অনুকূলে থাকা এবং প্রতিকূলে থাকা দুয়ের মধ্যে যেদিকে পাল্লা ভারী হয়, সে অনুসারে।
এই অর্থের বিশ্লেষণে আপনার সাথে আমার যোগাযোগ হল কথাটা ব্যাকরণগতভাবে ভুল। সঠিক হল আপনার সাথে আমার যোগাযোগের ফলে দেখা হল। এই ব্যাপারটা জানতে পারি সৈয়দ মুজতবা আলীকে নিয়ে লেখা গোলাম মোস্তাকিম এর বই “সৈয়দ মুজতবা আলী : প্রসঙ্গ, অপ্রসঙ্গ” থেকে।
তবে বিশ্লেষণাত্বক অর্থ যাইহোক না কেন, সৈয়দ মুজতবা আলীর মতে এই যে শব্দটা এখন “যোগাযোগের ফলে” না হয়ে “যোগাযোগ” আলাদা নিজস্ব অর্থে ব্যবহৃত হচ্ছে এটা ভাষার শক্তি, সজীবতার লক্ষণ।
আরেকটা শব্দ “পুংগীর পুত” বা “পুংগী”। এটা গালি হিশেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এর অর্থ জানতাম না। পুং হল মায়ানমারের এক বৃহদাকার বানর। এই বানরেরা ক্ষেতে যেসব মেয়েরা কাজ করতে যেত তাদের রেপ করার চেষ্টা করত এবং বার্মাতে এরকম ঘটনা নাকী প্রায়ই ঘটত। বার্মায় যাতায়াত ছিল বাঙ্গালীদের। সেখান থেকেই গালিটা এসেছে। এটাও একই বই থেকে জানা।
ছবিঋণঃ
The post সৈয়দ মুজতবা আলীঃ যোগাযোগ এবং আরেকটি শব্দ appeared first on মুরাদুল ইসলাম.