লাইউস এক রাজার ক্রাইসপাস নামক ইয়াং ছেলেকে ধরে নিয়ে রেপ করেছিল। এইটা ইদিপাসের কাহিনীর আদিপাপ।
লাইউস এর ছেলে ইদিপাস। সে এক সময় ঘটনাক্রমে বাপ লাইউসকে হত্যা করল এবং জোকাস্ট্রাকে বিয়ে করল। জোকাস্ট্রার সাথে তার সম্পর্কের ব্যাপারে সে জানত না। সুতরাং, সে নিজের অজান্তে এই পাপে পড়েছে।
তখন তৈরী হল আরো পাপ। পাপে পাপে পাপময় অবস্থা।
অতঃপর ইদিপাস এর শাস্তি ভোগ করে। তার দুই ছেলে সেই পাপের কারণেই পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। দুইজনই মারা যায়।
রাজা ক্রিয়ন বলেন, যে বিদ্রোহী ছিল তারে কোন সম্মান দেয়া হবে না। তার লাশ পড়ে থাকবে। আর অন্যজনকে যথাযোগ্য রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।
দুই মৃত ভাইয়ের বোন এন্টিগোনির এইখানে সমস্যা হয়। সে তার অন্যভাইকেও কবর দিতে চায় মর্যাদার সাথে। কারণ এটা তার নৈতিক ও পারিবারিক দায়িত্ব। আবার রাজা নিষেধ করেছেন যে্ন কেউ কবর না দেয়। সুতরাং, নৈতিক-পারিবারিক কর্তব্যের সাথে রাষ্ট্রীয় আইনের বিরোধ উপস্থিত হয়।
এখানে এন্টিগোনি রাষ্ট্রীয় আইন উপেক্ষা করে তার পারিবারিক দায়িত্ব পালন করে ভাইকে কবর দিতে যায়।
ফলে রাজা তাকে বন্দি করে রাখেন। সে মারা যায়। এই কাজের জন্য রাজা ক্রিয়নের পুত্রও গত হয়।
সবারই কিছু পারিবারিক দায়িত্ব আছে। যেগুলো অন্যসব দায়িত্বের উর্ধ্বে উঠে যেতে পারে ক্ষেত্রবিশেষে। একজন জঘন্য লোক মারা গেলে তার পোলা কাঁদতে পারবে না এমন দাবী করা অন্যায়। তারে তার শোক প্রকাশ ও বিলাপের অধিকার দেয়া উচিত।
এই সমস্ত ব্যাপারটা পাপের খেলা। পাপ কীভাবে বংশানুক্রমিকভাবে স্থানান্তরিত হয় সে কথাই। কিন্তু পাপ এমন কোন বস্তু নয় যে রক্তে মিশে থাকবে। লাইউস এর পাপের যে বিস্তার দেখানো হয়েছে তা রূপক। বংশানুক্রমিকভাবে মানুষ পাপ উত্তরাধিকারসূত্রে লাভ করে না, সে গ্রহণ করে। যদি কেউ তার পূর্বপুরুষের কাছ থেকে পাপ গ্রহণ করে তবে তাকেও সেই পাপের শাস্তি গ্রহণ করতে হয়।
যেমন একজন বড় ডাকাত। সে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অন্যায় করল, ডাকাতি করল। নিরীহ মানুষ খুন করল। তার পোলার কাছে অপশন থাকবে ডাকাতি বেছে না নেবার। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় সে ডাকাতি বেছে নেয় এবং তার বাপের পাপের অংশীদার হয়। নিজে আরো কিছু পাপ করে। ফলশ্রুতিতে তার জন্যও শাস্তি আসে এবং সেটা মূলত সেই আদিপাপেরই শাস্তি।
The post আদিপাপ এবং বিলাপের অধিকার appeared first on মুরাদুল ইসলাম.