আধুনিক দুনিয়া এক অর্থে সেমিকন্ডাক্টরের উপরে তৈরি। ম্যাকেনজির হিশাবে ২০২৩ সালের মতে সেমি কন্ডাক্টর ১ ট্রিলিয়ন ডলারের ইন্ডাস্ট্রি হবে।
১ ট্রিলিয়ন ডলার হচ্ছে সেই পরিমাণ টাকা যা দিয়ে আপনি ২৭৭১ টা পদ্মা সেতু বানাতে পারবেন।
সেমিকন্ডাক্টরের জন্য তাইওয়ানের উপর, এবং সাউথ কোরিয়া, চীনের উপর নির্ভরতা বেশী।
সেমিকন্ডাক্টরের সাপ্লাই চেইনে কোন সমস্যা হলে, প্রায় সব ইন্ডাস্ট্রিই নেগেটিভলি প্রভাবিত হয়। চিপ নাই গাড়ি বানাতে পারবে না, পিসি বানাতে পারবে না, মোবাইল বানাতে পারবে না।
বর্তমানে গ্লোবাল চিপ শর্টেজ চলছে। এর কারণ ২০২০ সালের কভিড প্যানডেমিক, আমেরিকা চীনের ট্রেড ওয়ারের কারণে চীনের উপরে দেয়া রেস্ট্রিকশন্স, ২০২১ সালে ক্রিপ্টো কারেন্সির বুম - ওইসব মেশিন হাই পাওয়ারফুল হয়ে থাকে মাইনিং এর জন্য, ২০২১ সালে তাইওয়ানে প্রাকৃতিক দূর্যোগ, ২০২২ এ ইউক্রেন-রাশা যুদ্ধ, সেমিকন্ডাক্টরের জন্য দরকারি উপাদান নিয়ন ইউক্রেন থেকে আসে মূলত।
এই সাপ্লাই চেইন ক্রাইসিসের মোকাবেলায় ইউরোপ আমেরিকা চাইতেছে লোকালি চিপ বানাতে।
আমেরিকা এখন ১০% চিপ বানায় এবং চাইতেছে ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০% বানাতে। ইউরোপ চাইতেছে ২০৩০ সালের মধ্যে ২০% বানাতে। দুই বন্ধু মিলে ২০৩০ সালে ৫০% বানাতে চাচ্ছে।
এইজন্যই তাদের লোকালি সেমিকন্ডাক্টরে ইনভেস্টমেন্ট বাড়ছে, এবং ধারণা করা হচ্ছে প্রচুর লোক লাগবে এই ইন্ডাস্ট্রিতে।
ডেলয়েটের অনুমান, বছরে ১ লাখের মত লোক লাগবে ২০৩০ এর মধ্যে, কিন্তু আমেরিকায় ১ লাখের কম ছাত্র ইলেক্ট্রিক্যাল এঞ্জিনিয়ারিং ও কম্পুটার সাইন্সে গ্রাজুয়েট শিক্ষায় ভর্তি আছেন।
এই জায়গায় সুযোগ আছে হয়ত বাংলাদেশী ইলেক্ট্রিক্যাল এঞ্জিনিয়ারিং কম্পুটার সাইন্সে এ পড়া ছাত্রছাত্রীদের আমেরিকায় মাস্টার্স বা গ্র্যাজুয়েট শিক্ষায় ভর্তি হবার।
সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রিতে ধরা যায়, সেমিকন্ডাক্টর এঞ্জিনিয়ারিং, ম্যানুফ্যাকচারিং, সফটওয়ার ডেভলাপমেন্ট, ও সেলস মার্কেটিং ভাগ থাকবে। সেইক্ষেত্রে, বাংলাদেশে ম্যানুফেকচারিং এর কারোখানা গড়ে উঠার সম্ভাবনা আছে।
যেইখানে, এসেম্বলি, টেস্টিং, প্যাকেজিং করা হবে।
এমনিতে আমেরিকা ইউরোপ যদি চিপ ডিজাইন করে আবার তাইওয়ানে পাঠায় এটিপির জন্য, সেক্ষেত্রে সাপ্লাই চেইনের সমস্যা দূর হবে না।
সম্ভবত মেক্সিকোতে প্ল্যান্ট হবে।
আমেরিকায় করলে খরচ বেড়ে যাবে।
তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর আমেরিকার অ্যারিজোনায় ৪০ বিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করে প্ল্যান্ট বানাচ্ছে।
বাংলাদেশে যদি গার্মেন্টের মত সস্তা শ্রম দেখে বড় কোম্পানিগুলা ইনভেস্ট করে, কারখানা বানায়, বাংলাদেশের একনোমিতে ম্যাসিভ প্রভাব পড়বে।
এই ইন্ডাস্ট্রি বড়, এবং কমপ্লেক্স। এখানে বিভিন্ন ধরণের সুযোগ আছে।
মূল ডিজাইন সম্পর্কিত জবে দরকারি স্কিলের জন্য, নিউরাল সেমিকন্ডাক্টরের হেড অব প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনের লেখাটা দেখতে পারেন।
এই লেখাটাও যেখানে তিনি বাংলাদেশে সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রির অবস্থার চিত্র তুলে ধরেছেন।
এই দুই লেখা ইলেক্ট্রিক্যাল এঞ্জিনিয়ারিং এ পড়া একজনরে ভালোই ধারণা দিতে পারবে সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রিতে যাইতে তার কী করা উচিত।
এর বাইরে প্রস্তুতি হিশাবে যারা এই সেক্টরে কাজ করছে বাংলাদেশের সেই সব কোম্পানিরে ফলো করুন। তারা কী করতেছে দেখুন।
বাইরে যেসব কোম্পানি এই ইন্ডাস্ট্রিতে বড়, তাদের ফলো করুন।
ইন্ডাস্ট্রির নিউজ ও ট্রেন্ডের সাথে আপডেটেড থাকুন।
ইভেন্ট এবং কনফারেন্সগুলাতে পারলে জয়েন করুন। প্রফেশনাল কম্যুনিটিগুলাতে জয়েন করুন।
ভালো হয় ইন্ডাস্ট্রির কাউরে মেন্টর হিশাবে পাইলে।
আর মেন্টর খোজার সময় মনে রাইখেন, কারো কোন দায় নাই আপনারে শেখানোর। নিজের প্রয়োজনে যাইতেছেন তাই পর্যাপ্ত সম্মান দিবেন, তার সময়ের ভ্যালু দিবেন।
এই লেখা শাকিল আহমেদের ফেসবুকে করা প্রশ্নের উত্তরে।
Recently একটা নিউজ দেখলাম, আমেরিকান মার্কেটে সেমি কন্ডাক্টর এর উপর সামনের ১০ বছরে ৬৭হাজার লোক শর্টেজ পড়বে। এখন আমি কিভাবে এই জবের জন্য বা semiconductor এর উপর ফোকাস করে ঐ জব এর জন্য প্রিপারেশন নিতে পারি? - শাকিল আহমেদ।
এতো ফাস্ট বিস্তারিত উত্তর আসবে। আশা করি নি ❤️ ভালোবাসা আপনার জন্য। আপনার ক্ষুদে ভক্ত হয়ে আপনার রেসপন্স পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে যাচ্ছি।