নেতফ্লিক্সে মোজেস সিরিজ দেখলাম। মুসা নবীর কাহিনী।
ইজরাইলিরা চাইরশো বছর ধরে মিশরে দাস হইয়া আছে, ফারাওদের অধীনে। তখন ফারাও এর গণক বলে ইজিরাইলিদের মধ্যে এ শিশু জন্ম নিবে, যে ক্ষতির কারণ হবে। ফারাও সব শিশুদের মাইরা ফেলার ব্যবস্থা করে। মুসা নবীর তখন জন্ম হয়, দুই ধাত্রী রাজার আদেশ অমান্য করে শিশুটারে লুকাইতে হেল্প করে। এই শিশুরে ঝুড়িতে ভরে ভাসাই দেয়া হয়। এক এক্সপার্ট বলতেছিলেন, ধাত্রীদের এই কাজ হইল আদি সিভিল ডিস অবিডিয়েন্স। তারা ইজরাইলি ছিলেন না, কিন্তু রাজার অন্যায় আদেশ মানেন নাই।
পেশা হিশাবে ধাত্রী রহস্যজনক এবং একটা আলাদা মর্যাদার ছিল সব সময়ই, কারণ তারা নতুন জীবনরে আনার কাজ করতেন। এইখানে শেয়ার করা যায়, সক্রেটিসের মা ছিলেন একজন ধাত্রী, এবং সক্রেটিস যে লোকদের ভিতর থেকে কথাবার্তা বলে চিন্তা বের করে আনতেন, এটারে তিনি তার মায়ের কাজের মতোই দেখতেন।
ফারাও এর বইনের তখন মৃত সন্তান হইছে। উনি সুইসাইড করছে যান নীল নদে। গিয়া পাইয়া যান শিশু মুসারে। তিনিই আসলে নাম দেন মুসা, অর্থ যারে পাওয়া হইছে পানি থেকে। লালন পালন করতে থাকেন, ফলে ফারাও এর রাজপ্রাসাদেই বড় হইতে থাকেন নবী মুসা।
এই কাহিনী নানাভাবে নানা কালচারে প্রচলিত। শিশু জন্ম নেয়, তারে হত্যার জন্য ফেলে দেয়া হয়, কিন্তু সে বাঁইচা যায়, ও পরে ঘটনা ঘটায়।
এই সিরিজ বানানো হইছে বাইবেল থেকেই, এবং তিন ধর্মের এক্সপার্টদের কমেন্টারি নেয়া হইছে, ফলে গ্রন্থগত দিক থেকে অথেনটিকতা আছে, দৃশ্যায়নের ড্রামাটাইজেশন থাকলেও কাহিনীগত ভাবে ঠিক রাখার ট্রাই করা হইছে। কিন্তু রিলিজিয়াস দিক থেকে সবাইরে খুশি করা যাবে না, কারণ এইসব ব্যাপারে যার যার সুবিধামত ব্যাখ্যা সবাই চায়।
মুসা নবীর ক্যারেক্টার খুবই ইন্টারেস্টিং। তিনি পারফেক্ট পারসন না। তার রাগ কন্ট্রোলে সমস্যা হয় শুরু থেকেই দেখা যায়। এখানে উল্লেখ করা যায়, ফ্রয়েড মোজেস ও মনোথিজমে দুই মুসার তত্ত্ব দিছিলেন। তার ব্যাখ্যানুযায়ী, প্রথম রাগী মুসা হইলেন মিশরীয় ভাগ্যাহত এক অভিজাত। যিনি এক যাযাবর দলরে নিয়া নীলনদ অতিক্রম করে মরুভূমিতে বসতি স্থাপন করেন ও কঠোর একেশ্বরবাদ প্রচার করেন, যেটা আবার আরেক ফারাও আখনয়াটনের একেশ্বরবাদ ছিল। তিনি মারা যান, এই যাযাবর জাতি আবার মূর্তি পূজা শুরু করে, তখন পাশের জাতির এক শান্ত, স্থিতধী লোক আসেন ও তাদের নেতা হন। তিনি আগ্নেয়গিরির দেবতা থেকে পর্বতে গিয়া ট্যাবলেট আনেন। ইনি দ্বিতীয় মুসা। যাই হোক, বাইবেলের গল্পে যাই, ফারাও এর এক কর্মী মারতেছিল ইজরাইলি দাসরে, ইয়াং মুসা, ওই সময় তিনি নবী হন নাই, তারে মারতে না করেন। কর্মী ঠিকঠাক শুনে নাই, ফলে তিনি ইট দিয়া মাইরা তারে খুন করে ফেলেন।
এবং এই খুনের জন্যই মিশর থেকে পালাইয়া যান মরুভূমিতে।
ওইখানে গিয়া এক মরু জাতির লগে থাকেন। বিয়া করেন। এবং এক পর্যায়ে ওইখানে সাইনাই পর্বতে যান, গডের লগে মোলাকাত করতে। গড দেখা দেন, তারে বললেন, যাও মিশরে, ইজিরাইলিদের পথ দেখাও। নিয়া যাও প্রমিজড ল্যান্ডে।
মুসা নবী আবার যান মিশরে। ফারাওরে গিয়া বলেন আমার লোকদের ছাইড়া দাও, আমরা ক্যানানে চলে যাব, ওইটাই আমাদের ল্যান্ড। ওইখানে গিয়া আমরা স্যাক্রিফাইস করব।
ফারাও বলেন, তোমরা তো চিরতরে চইলা যাইবা।
ফারাও তাদের যাইতে দেন না। যদিও বাইবেল তারে খারাপ হিশাবে দেখায়, কিন্তু তার লজিক্যাল পয়েন্ট ছিল। মিশরে ইজিরাইলি এবং অন্যান্য জাতিরা কাজ করত। একদলরে যাইতে দিলে অন্যান্যরাও যাইতে চাইবে। তখন মিশর চলবে কেমনে? যেমন এখন যদি ঢাকার সব গার্মেন্ট কারখানার কর্মী বলে, আমাদের প্রমিজড ল্যান্ড ভাসান চর , আমাদের যাইতে দাও, সবাই একসাথে কইলে, সরকার বা মালিকেরা এটা মানতে পারবে? তখন ফ্যাক্টরি চলবে ক্যামনে?
তাছাড়া ফারাও বললেন, তোমাদের আমরা চাইরশ বছর খাওয়াইলাম, পাললাম, এর কি দাম নাই?
মুসা প্রথমে ফারাওরে কনভিন্স করতে অলৌকক প্রদর্শনী করলেন। রাজার যাদুকরেরা হাইরা গেল। তারা এমন বিস্ময়কর জিনিশ দেখে নাই। মুসা নবীর হাতের লাঠি সাপ হইয়া তাদের বানানো সাপগুলারে খাইয়া ফেলল।
ফারাও তাও মানেন না।
তখন মুসা নবীর সাথে গডের নিয়মিত কথা হয়। গড বললেন, ও মানবে না। কারণ আমি ওর অন্তরে মোহর মাইরা দিছি। কিন্তু আমি ওরে কঠিন শাস্তি দিমু।
তিনি প্রথমবার, নীল নদ রক্তে ভাসাইয়া দিলেন, খাবার মত পানি থাকল না। একবার, ব্যাঙ আইসা ভরে গেল মিশরে, সবখানে ব্যাঙ, একবার উকুন, একবার শস্য খাওয়া পোকা, একবার শিলাবৃষ্টি, এবং সবচাইতে মারাত্মক, গড মিশরের সকল প্রথম সন্তানরে মাইরা দিলেন। আগে মুসা নবীরে বললেন, ভেড়া জবাই দিয়া তার রক্ত ইজরাইলিদের ঘরে লাগাইবা যাতে মৃত্যু তোমাদের ঘরে না যায়। মুসা নবী এটা করেন, এবং মৃত্যুর দূত তাদের ঘর পাস ওভার কইরা মিশরীয়দের ঘরে হানা দেন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই পাসওভার পালিত হয়।
এই ঘটনাগুলা হিংস্র, ইজরাইলিদের গড যে মিশরীয়দের প্রতি কত হিংস্র, নির্মম হইতে পারেন তার প্রমাণ। অন্যদিকে, মিশরীয়দের গডেরা কিছুই করে না। ইজরাইলি গড দেখাইতে ছিলেন তার ক্ষমতা।
এই জায়গায় মুসা নবীর মনেও দ্বিধার জন্ম হয়। গড ক্ষমতাবান হইলে, তিনি নিজে কেন ফারাওর মন বদলান না। বা, এই যে এত লোকরে মারতেছেন, সবাই কি দোষ করছে? ইজরাইলিদের জন্য, অন্য সব জাতিরে মাইরা ফেলতে হবে, এটা কেমন হিশাব?
মনে হয়, গডের এই কাজ বেশীরভাগই ইজরাইলিদের বুঝাইতে। তাদের বুঝানো দরকার ছিল গডের পাওয়ার। কারণ এইটা না হইলে তারা মানবে না।
আরেকটা পয়েন্ট আছে বুঝার মত, ফারাও এর সাইকোলজি। উনি অত দোষী না ঠিক আছে, কিন্তু তার একটা মেজর উইক পয়েন্ট আছে যেইটারে ধর্ম বিনাশ করতে চায়। গড চান না তারে মানুক সবাই, চাইলে তিনি কেন ফারাওরে নিজের বান্দা বানাইলেন না, বা মিশরীয়দের? তাইলে গড বা এই ধর্ম কী চায়? গড চান ব্যক্তি নিজে যেন নিজেরে গড মনে না করে। ফারাও নিজেরে গড মনে করতেন, ওই কালচারে এই ধারণাই ছিল। কারণ তিনি তার গডদের লগে কমিউন করেন। এই ধারনাটা আগে ছিল। বাইবেলের গড আইসা বলেন, এইটাই ভুল, ব্যক্তির গড হওয়া যাবে না।
যত উপাসনা, প্রার্থনা, সাবমিশন সবের উদ্দেশ্য একটাই, ব্যক্তি যেন নিজেরে গড ভাবতে শুরু না করে। এই জায়গাতেই গাড়লরা মাইর খাবে, যারা ইবাদত বন্দেগী কইরা গর্বিত হইয়া যায়, ও ডিকটেট করতে থাকে কে কী, আনকনশাসলি তারা নিজেরে গড ভাবতে থাকে। নবী মুসা গডের বানী সম্বলিত ট্যাবলেট ভেঙ্গে দেন, রাগে খুন করেন, এইরকম অনেক আছে তার রাগের কাহিনী, দ্বিধার কাহিনী, কিন্তু গড তারে এর জন্য শাস্তি দেন নাই। শাস্তি দিছেন যখন একবার তিনি নিজেরে প্রায় গড ভাবা শুরু করছিলেন খুব অল্পক্ষণ, আবছাভাবে। এই ঘটনাটা নিচে বলব।
সূফীদের যদি দেখেন, তাদের সবার ক্ষেত্রেই এই জিনিশটা আছে, তারা মানুষ যাতে নিজেরে গড ভাবতে না পারে, তার নফস যেন ওইখানে না যায়, এই সাধনাই বেশী গুরুত্ব দিয়া করেন। কখনো তাদের প্র্যাকটিসগুলা উদ্ভট ঠেকে সাধারণের কাছে। কিন্তু, তারা জানেন, মানুষের নফসের এক প্রধান দূর্বলতাই হইল নিজেরে গড ভাবার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, এবং আনচেকড থাকলে এটা হবেই।
গল্পে যাই, পরে ফারাও তাদের যাইতে দিতে রাজি হন। মুসা নবী দলবল নিয়া যাত্রা করেন। ফারাও পরে আবার মত বদলান, ও এটাক করেন। তখন, রেড সি মুসা নবীর লাঠির সাহায্যে দুইভাগ হয়, গডই করেন। ইজরাইলিরা নিরাপদে পার হয়। ফারাও দলবল নিয়া গেলে পানিতে ডুবে মারা যান। আমরা শুনলাম, নীল নদে মরল ডুবে পাষাণ ফেরাউন।
ফারাওরে কঠিন হিশাবে দেখানো হইছে বাইবেলে, কিন্তু একটা ইন্টারেস্টিং পয়েন্ট, ইসলামি স্কলার বললেন, ফরিশতা জিব্রিল নাকি নবী মুহাম্মদরে বলছিলেন, ফারাও পানিতে ডুবার কালে গডরে মাইনা মুসলিম হইতে চাইছিল। কিন্তু, জিব্রিল তারে দেখতে পারতেন না, তাই তার মুখে মাটি ভইরা দেন যাতে সে মুখে ইমান আনতে না পারে।
রেড সি পার হইয়া আবার মুসা নবী দলবল নিয়া মরুভূমিতে। ক্যানান, প্রমিজড ল্যান্ডে তাদের নিয়া যাবার জন্য তার যাত্রা। কিন্তু এইটা দীর্ঘ হইতে হইতে চল্লিশ বছর লাগল, সেই অডিসির যাত্রার মত। এই যাত্রাপথে ঘটতে লাগল নানা ঘটনা। এক হইল, মুসা নবীর রাগ কন্ট্রোলের সমস্যা। দুই, এই জাতি দাস আছিল, হঠাত ফ্রি হইছে, এবং এই কঠিন মরুভূমিতে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়া চলা তাদের জন্য ইজি ছিল না। তাদের বার বার মনে হইতেছিল মিশরে আরামের জিন্দেগী ছাইড়া এই লোকের কথায় আমরা যাইতেছি কই, সে নিজেই তো ঠিকঠাক জানে না কোনদিকে যাব।
তখন আবার আগের মত গড মুসা নবীর সাথে স্বাক্ষাত করেন না। মুসা পড়লেন ফাঁপরে। এত দূরে নিয়া আইসা এখন গড দেখা না দিলে, পথ না দেখাইলে ক্যামনে হবে! মুসা আবার কষ্ট করে সাইনাই পর্বতে উঠেন।
মুসা নবী যখন আবার সাইনাই পর্বতে যান গডের লগে মোলাকাত করতে, তখন ৪০ দিন দেরী হওয়ায় তার জাতির লোকজন স্বর্ণের বাছুর বানাইয়া তারে গড মানতে শুরু করে। মুসা নবী টেন কমান্ডম্যান্টস লেইখা নিয়া আসলেন ট্যাবলেটে, কিন্তু আইসা দেখেন তারা পূজা করতেছে। তিনি রাগে, হতাশায় ট্যাবলেট ভাইঙ্গা ফেলেন।
এই চল্লিশ বছরের যাত্রাটা কেন, কেন তাদেরকে এত কষ্ট করতে হইল, কেন গড নিজের প্রিয় জাতিরে ইজিলি প্রমিজড ল্যান্ডে নিয়া গেলেন না? কেন তিনি সহজে দেখা দিয়া বললেন না, আবার মুসা নবীরে তুললেন সাইনাই পর্বতে? মুসা নবীর সাথে সাথে এই প্রশ্ন পাঠকেরও হয়। গড চাইছেন, তারা তৈরি হউক হার্ডশিপের মধ্য দিয়া, তারা বুঝতে পারুক ফেইথ কী। জিন্দেগিতে কিছু পাইতে চাইলে, এর জন্য যোগ্য হইতে হয়, গড এই মেসেজই দেন। কারণ যোগ্য না হইলে, পাইলেই তুমি ধরে রাখতে পারবা না।
শেষ পর্যন্ত প্রমিজড ল্যান্ড তারা পায়। কিন্তু প্রবেশের আগেই নবী মুসার মৃত্যু হয়। কারণ এক ভুলের জন্য গড তারে প্রমিজ করছিলেন, তুমি প্রমিজড ল্যান্ড দেখবা, কিন্তু প্রবেশ করতে পারবা না, তোমার বাচ্চারা থাকবে সেখানে। এই ভুলটা ছিল, একবার মরুভূমিতে পানি মিলতেছে না। ইজরাইলিরা ক্ষুব্ধ হইয়া বিদ্রোহ করে বসল। মুসা ও তার বড় ভাই হারুন তাবুতে আলোচনায় বসলেন। গড আইসা মুসারে বললেন, একটা পাথরের কাছে গিয়া পাথরের লগে কথা বলতে। মুসা দলবল নিয়া গেলেন। রাগে তিনি এক পর্যায়ে লাঠি দিয়া পাথরটাতে আঘাত কইরা বসলেন দুইবার, ও বলে ফেললেন, আমরা কী এই পাথর থিকা পানি বের করব, এইটাই চাইতেছ তোমরা? পানি বের হইল। কিন্তু এইটাই ছিল তার ভুল। তিনি ভাবতেছিলেন তিনি পানি বের করতেছেন, এবং ক্ষমতা তার। গড তারে বলছিলেন পাথরের লগে কথা বলতে, তিনি লাঠি দিয়া আঘাত করলেন। ক্ষণিকের এই ভুলে গড তারে বলেন, তোমার শাস্তি হবেই এইবার। তুমি যাইতে পারবা না প্রমিজড ল্যান্ডে।
এখন ইজরাইলি ফিলিস্তিনের সংঘাত চলতেছে, হামাসের এটাকের মাধ্যমে যার শুরু, এখন ইজরাইলিরা ফিলিস্তিনে প্রায় নির্বিচারে হত্যায় লিপ্ত। এইটা কিন্তু বাইবেলেরই যুদ্ধ। ওই যে সেই কোন কালে প্রমিজড ল্যান্ডের কিচ্ছা আছিল, তার ডালপালা ধরে খ্রিস্টানিটি ও ইসলামের আবির্ভাব, সেই সূত্র ধরেই এই ফাইট। তাদের সংঘাতের ভাবাদর্শ তাদের দুই বুক, একই গল্প, একই ভিন্ন আঙ্গিকে। নেটফ্লিক্স তাই এই সময়েই সিরিজটারে এড করলো, এর রাজনীতি হইল, মনোথিজমের কাহিনীটারে আরও প্রচার করা।
ধর্ম নিরপেক্ষ দিক থেকে কি কোন ইনসাইট আছে এই প্রাচীন গল্পে যা আমাদের কাজে লাগতে পারে?
আছে। যেমন, মুসা নবীর ক্যারেক্টার। তিনি পারফেক্ট না, কিন্তু গুরুদায়িত্ব তার উপর বর্তাইছে। তার ভেতরে শুরু থেকে ডাউট আছিল, তিনি যোগ্য না। কিন্তু দেখা গেল কি? তিনি যোগ্য হইয়া উঠলেন, গ্রেট হইয়া উঠলেন, পুরা বিবিলিক্যাল হিস্টরিতে তার মত নবী নাই, তিনি বড় বড় অলৌকিকতা দেখাইছেন, তার সময়ে গড সবচাইতে মারাত্মক পাওয়ার দেখাইছেন, আর বড় ব্যাপার, তিনি গডের লগে ফেইস টু ফেইস মোলাকাত করছেন, আর্গুমেন্টও করেছেন।
“since then, no prophet has risen in Israel like Moses, whom the Lord knew face to face. . . . For no one has ever shown the mighty power or performed the awesome deeds that Moses did in the sight of all Israel” (Deuteronomy 34:10, 12)
একজন মানুষরে পারফেক্ট হইতেই হবে এমন না। তার ফ্ল নিয়াই তার যাত্রা। এবং যাত্রা ব্যাপারটাই মূল বিষয়। হয়ত বাইবেলের বিষয় প্রমিজড ল্যান্ড না, যেটারে আক্ষরিক ধরে নিয়া এখন এত যুদ্ধের কাহিনী। বরং যাত্রাটাই বিষয়। যেই যাত্রা ছিল এক শিশুর ঝুড়িতে থাকা অবস্থায় ভাইসা ভাইসা যাত্রা, কতোটা পাওয়ারলেস সে, চারদিকে কত বিপদ।
এই যাত্রার শেষ হইলে নতুন যাত্রার শুরু, খুনি হইয়া মরুভূমিতে। এরপর জাতিরে মুক্ত করার স্ট্রাগল, ফারাওর লগে ফাইট। এই যাত্রায়, রেড সি ভাগ কইরা অসম্ভবরে সম্ভব হয়, ফেইথ এবং সাধনায়। কিন্তু যাত্রা শেষ না, আবার চল্লিশ বছরের যাত্রা মরুভূমিতে, নানা বিপদ, খাবার নাই, ডাকাত, এবং দলের ভেতরে বিদ্রোহ। সব মিলাইয়া এই যে চলতে থাকা, নিজের রাগ হতাশা দ্বিধা এইগুলা নিয়াও, প্রিয় নবী মুসার এইটাই তীর্থযাত্রা, এর মাধ্যমেই তিনি গ্রেট হইয়া উঠেন।
আপনি এখন যাই হইয়া থাকেন, যত ফ্ল থাক, যদি নিজের যাত্রাটারে বুঝতে পারেন, আলিঙ্গন করেন ও চলতে থাকেন, তাহলে আপনিও যাত্রাপথে বেটার হইতে থাকেন। এই পথে আপনার ডাউট, দ্বিধা, হতাশা, রাগ, মানবিক দূর্বলতা থাকবে। বিপদ থাকবে। কিন্তু যদি বিশ্বাস রাখেন নিজের উপরে ও যাত্রায়, এবং চলতে থাকেন তাহলে আপনে বেটার হবেনই। যদিও বলা হইছে মুসা নবীরে এক ভুলের জন্য তারে প্রমিজড ল্যান্ডে যাইতে দেয়া হয় নাই, তাই আগেই মারা যান, কিন্তু সবই মূলত গডেরই প্ল্যান, সেইদিক থেকে আসলে এখানে রূপকার্থে যাত্রাটারে প্রাধান্য দিতেই এটা করা হইছে। প্রমিজড ল্যান্ডে তারে নিয়া গেলে লক্ষ্যটারে প্রাধান্য দেয়া হইত।