আগস্ট ১৪, ২০২৩ এ এটা লেখিঃ
প্যাসিভ এগ্রেশন ও প্যাসিভলি হিউমিলিয়েট/ অপমান করতে চাওয়া মানুষের এক কমন টেন্ডেন্সি।
সরাসরি এগ্রেশন বা অপমান করতে গেলে এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে এই লোকটা অপমান করতেছে। ফলে তার নিজের অবস্থান, সোশ্যাল ক্যাপিটাল ঝুঁকিতে পড়ে।
এইজন্য অনেক মানুষ প্যাসিভলি অপমান করতে যায়।
যেমন এই ভিডিওতে সাংবাদিক অভিনেত্রী ঋতুপর্ণাকে বয়স নিয়ে যে প্রশ্নটা করেছেন, তা অপমান জনক।
কিন্তু এটা প্যাসিভ। তিনি জিজ্ঞাসা অভিনেত্রী কীভাবে নিজেরে ফিট রাখেন এই বয়েসে। কিন্তু, এই জিজ্ঞাসা এটাও বলে যে, অভিনেত্রীর বয়স ৫২।
অবশ্যই নায়িকা/ প্রধান অভিনেত্রী রোলে অভিনয় করা ঋতুপর্ণার ব্র্যান্ডের জন্য এটা ক্ষতিকর।
তিনি নিশ্চয়ই চাইবেন তা তিনি ৫২ বছরের এই ন্যারেটিভ দর্শকদের মনে তৈরি হোক।
মানে, এই ন্যারেটিভ তৈরিই যদি হয়ে যায়, তাহলে তার এত ফিট থাকার মাহাত্ম্য থাকলো কই।
অর্থাৎ, প্রশ্নটা মেনে নিলে তিনি ওই জিনিশটাই মেনে নিতেন, দৃশ্যত যে জিনিশের বিরুদ্ধে প্রশ্নটা করা হয়েছে।
ঋতুপর্ণা বুঝতে পারে সাথে সাথে প্রতিবাদ করতে গেছেন। ওই ফ্রেমিংটা মানেন নাই।
সাংবাদিক এতো নাছোড়বান্দা যে, তিনি আবার স্পষ্টভাবে ৫২ বছরের ইস্যুটা আনছেন।
হতে পারে এটা তার স্টুপিডিটি। কিন্তু টাও ইগনোর করার উপায় নাই। চিপোলা ম্যাট্রিক্স জানাইছিল, স্টুপিডেরা সবচাইতে ক্ষতিকর, খারাপদের চাইতেও।
ঋতুপর্ণা প্রশ্নের ফ্রেইম মেনে নেন নাই, প্রতিবাদ করেছেন, নিজের অবস্থান ক্লিয়ার করেছেন।
তিনি এটারে ধরাইয়া দিছেন দর্শকদের ও হাস্যকর করেছেন ব্যাপারটারে।
এটা এই ধরণের অবস্থায় একটা ভালো প্রতিক্রিয়া। তিনি ঠাণ্ডা মেজাজেই করতে পেরেছেন।
যদি "প্রশংসা" ভেবে ফ্রেম মেনে নিতেন ও উত্তর দিতেন, আমি এইভাবে ডায়েট কন্ট্রোল করি এই সেই, তাহলে তার ব্র্যান্ডের জন্য ক্ষতিকর হইত।
দুইটা বিষয়, নিজেরে ঠাণ্ডা রাখতে হবে। দুই, ফ্রেম অস্বীকার করতে হবে।
ফ্রেম অস্বীকার দুইভাবে করা যায়।
এক সরাসরি অস্বীকার ও প্রতিবাদ, যেটা এখানে করলেন অভিনেত্রী।
দ্বিতীয় উপায়, উলটা যে প্যাসিভ এটাক করছে তারে প্রশ্ন করে, সে যে এটাক করছে তা দেখাইয়া দেয়া, যেটা এখানে করেছিলেন টম হার্ডি।
এখানে কালচারাল এক পার্থক্যও আছে। টম হার্ডি যখন প্রশ্ন করে ব্যাপারটা ধরাইয়া দিলেন ওই দেশের সাংবাদিক লজ্জা পাইয়া চুপ গেছে।
কিন্তু ঋতুপর্ণার ক্ষেত্রে সাংবাদিকেরা তারে বার বার বয়স নিয়েই প্রশ্ন করে গেছে, বয়সে ছোট নিরবের সাথে কাজ করা ইত্যাদি, ছেলেমেয়ের বয়স, এগুলাও আনছে। তার প্রতিবাদের পরেও বয়স কেন্দ্রিক আলোচনায় রইছে, কারণ কালচারালি এইটার ভুল তারা ধরতে পারে না।
এর প্রভাব হিশেবে এখন এই বক্তব্য ভাইরাল হবে নিউজ আকারে, বয়স নিয়ে তার অবস্থানটা।
প্রাসঙ্গিক, মানুষের "বয়স" জিনিশটা কী, এই বিষয়ে বিস্তারিত এখানে পড়তে পারেন।
আগস্ট ১৬, ২০২৩ এ এটা লেখলামঃ
অভিনেত্রী ঋতুপর্ণার নতুন এই স্বাক্ষাতকার দেখলাম। আগের পোস্টে বলছিলাম, সাংবাদিক তার ৫২ বছর বয়স নিয়া যে প্রশ্ন করছে, তা তিনি ভালোভাবে হ্যান্ডেল করছেন। তিনি সাংবাদিকের ফ্রেম মেনে নেন নি, প্রতিবাদ করছেন। শান্ত ছিলেন।
কিন্তু এইখানে তার কথাবার্তা শুনে মনে হলো, ওইটা যে তিনি ভালোভাবে হ্যান্ডেল করছিলেন তা বুঝে করেন নি। অভিজ্ঞতায় স্বতস্ফুর্ত ভাবে করছিলেন।
কনভারসেশনে ক্ষমতার গতি প্রকৃতি বুঝে করলে এইখানেও তিনি এই সাংবাদিকের ফ্রেম মেনে নিতেন না। ওই প্রসঙ্গ নিয়া আর কিছু বলতেন না।
এই সাংবাদিক কিন্তু তার বেশী ক্ষতি করছে। যদিও এই সাংবাদিক পক্ষে থেকে কথা বলছে।
ঋতুপর্ণা এক পর্যায়ে রেগে গেলেন, আগের সাংবাদিকরে স্টুপিড বললেন আর বোকার মত বললেন, সাংবাদিক তার জায়গায় আসতে পারবে না ইত্যাদি।
সাংবাদিক তার জায়গায় আসতে যাবে কেন! সে কি নাইকা নাকি। এই ধরণের কথা লেইম।
তার এই ভুল করা দেখে অবাক হইলাম, আগের কনভারসেশন দেখে তারে বুদ্ধিমান মনে করছিলাম।
তার এই প্রতিক্রিয়া ও আক্রমণ কী বলতে চাইল? বলতে চাইল তার বয়েস হয়ে গেছে। যেটা ওই সাংবাদিক বুঝাইতে চাইছিলেন ৫২ বছর দিয়া।
ছবিতে তিনি দুই হাত দিয়া জায়গা দেখাইতেছেন। বলতেছিলেন এত বছর কাজ করে ইন্ড্রাস্ট্রিতে একজন জায়গা করে ইত্যাদি। এটারে পড়া যায়, ইন্ড্রাস্ট্রিতে তার জায়গা এখন কত বড় তিনি মনে করেন, সেটাই প্রকাশ পেয়েছে এই আকারে।
খুব বড় না, ছোট হয়ে যাচ্ছে।
কম্পেয়ার যদি করেন, তিনি 'ভদ্র আমরা' বলতে গিয়ে দুই হাত দিয়া যে আকার দেখাইছেন, তা বেশ বড়। অর্থাৎ মনে মনে তিনি নিজেরে ভদ্রতায় অনেক বড় মনে করেন।