শিল্পসাহিত্য সম্পর্কে খুবসত্য কথাগুলোর একটা হলো এই যে আগের কালের চেয়ে পরের কালে সব সময়ই মহত্তর লেখক শিল্পীরা জন্মাতে থাকে ও থাকবে।
- সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের ডায়রী।
কেউ কেউ পাঠক। সকলেই নয়। বাংলাদেশে অনেক কিছুই হয় না। সাহিত্য বা শিল্প সমালোচক বলে কিছু হয় নি। হয় না।
- সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের ডায়রী।
ফ্ল্যাটারী ১০০% মিথ্যে হলে ধরা পড়ে যায়। ১% সত্যি থাকা দরকার।
- সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের ডায়রী।
Most Imp thing হল উত্তমকুমার কীভাবে প্রস্রাব করত। রাতে, নেশাতুর, হয়ত সত্যজিৎ রায়ের মুখে।
- সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের ডায়রি।
লেখক কোনো অভিজ্ঞতার ভিতরে থেকে লিখতে পারে না। সে বেরিয়ে আসে অভিজ্ঞতা থেকে। বা অভিজ্ঞতাই তাকে বাইরে ঠেলে দেয়। যেমন একজন লেখক একটি প্রেমের অভিজ্ঞতার কথা লেখতে গিয়ে লিখেছিল, ‘ভালবাসাই, আমি ভালবাসতে গিয়ে দেখেছি, আমাকে ভালবাসার বাইরে ঠেলে দিয়েছে।’
এই যে বাইরে থেকে লেখা, আউটসাইডার হিসেবে- নইলে ফর্ম এবং বিষয় সেভাবে চেহারা নিতে পারে না। জল যখন নড়ছে তখন মুখ দেখা।
এ হয়তো সেই ইমোশন রিফলেকটেড ইন ট্রাংকুইলিটির কথাই বলা হলো। আরও স্পষ্ট করে। যে লেখক প্রকৃত অভিজ্ঞতা থেকে লিখতে পারে না। তার ফর্ম ও কন্টেন্ট মৌলিক অভিজ্ঞতাকে চাহিদা মতো কেটেকুটে নেয়। প্রকৃত অভিজ্ঞতা থেকে লিখতে গেলে হয় ‘গঙ্গা’। ফর্ম ও কন্টেন্টের দাবী মেনে অভিজ্ঞতার বাইরে থেকে লিখলে হয় ‘পদ্মা নদীর মাঝি’। এইভাবে সমরেশ বসু ও মানিক বন্দোপাধ্যায়কে পাশাপাশি রেখে ভাবা যেতে পারে।
- সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের ডায়রী, ১ মার্চ, ১৯৯০।
মানুষ নিজেকে কত ভালোবাসে তার প্রমাণ বাস ড্রাইভার(লং ডিসট্যান্সের) বিশেষত মেল-ট্রেনের ড্রাইভার। মাত্র একজন মানুষকে ধ্বংস করে সে সহস্র মানুষকে ধ্বংস করার তৃপ্তি পেতে পারত। সে তা করে না। নিজেকে ধ্বংস করার ক্ষমতা নেই। যদিও বাকী ঐ এক সহস্র যাত্রীকে সে পিঁপড়ের মত মারতে পারে।
প্লেনের পাইলটও একই। যদিও তার প্যারাসুট আছে। কিন্তু সেসব অপারেট করা রিস্কি। তাছাড়া তার প্যারাসুট যে আগ্নেয়গিরির মুখে নামবে না তার নিশ্চয়তা কী!
- সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের ডায়রি।
কাফকা নিজে একটি ডিক্সনারি। সেখান থেকে এবং এবং অন্যান্য লেখক থেকে-গান-ছবি এবং পূর্বজন্মের যেকোন জিনিসের তদন্তসূত্র ধরে ধরে এগোবার অধিকার লেখকমাত্রেরই আছে। দস্তয়ভস্কি থেকে কাফকা, ইয়েটস থেকে জীবনানন্দ- এসব গু সমালোচকেরা অনেক ঘেঁটেছেন।
আসল কথা হল, ইন্টার টেক্সুয়ালিটি। এসম্পর্কে ভাষাবিজ্ঞানী মিখায়েল বাখতিন- যথেষ্ট বলে গেছেন। একটি সাহিত্যকর্ম সম্পূর্ন মৌলিক হতে পারে কেবল নিরক্ষরের ক্ষেত্রে- যেমন আউল বাউল। এমন কি আমাদের আজকের মুখের ভাষাও মৌলিক নয়। তা সহস্র বছর ধরে বিবর্তনময় সামাজিক নৃতাত্ত্বিক ভাষাগতির পরিণতি।
এ ধরণের প্রশ্ন সেই সব সমালোচকদের যারা লেখাকে মনে করেন 'মাল'। এবং তাকে সেভাবে নাড়াচাড়া করেন। লেখার নিয়ত পরিবর্তনশীল পরমাণু ব্যাপার তারা জানেন না।
-সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের ডায়রি, (৮ জুলাই, ১৯৯০)।
পেইড সাবস্ক্রিপশনে বাংলাদেশ থেকে কেউ ডলারে সাবস্ক্রাইব করবেন না। এটা বিদেশীদের জন্য। বাংলাদেশ থেকে সাবস্ক্রাইব করার লিংক এখানে।