রেনে জিরার্দের যে মিমেটিক ডেজায়ারের আইডিয়া, মানুষের নিজস্ব কোন ডেজায়ার নাই, সে অন্যের ডেজায়ার কপি করে। আমার অনেক লেখায় এই আইডিয়ার নানা ব্যাখ্যা, বিস্তারন আছে। নিউজলেটার শুরুর দিকে বেসিক ঠিক করতে আপনে লাইফে কী চান, লেখাটা ছিলো এর উপরেই নির্মিত।
মিমেটিক ডেজায়ার, অন্যের ডেজায়ার ব্লাইন্ডলি অনুকরণ, মানুষের যাবতীয় অশান্তি ও বিশৃঙ্খলার মূলে।
এইটার বিরুদ্ধে গিয়ে মানুষরে লাইফ লিড করতে হবে, যদি সে নিজের লাইফ লিড করতে চায়, ও শান্তি চায়।
এই গেলো তত্ত্ব বা ইনসাইট। কিন্তু, প্র্যাক্টিক্যাল আলাপ, কীভাবে একজন মিমেসিসের বিরুদ্ধে গিয়ে লাইফ লিড করবে।
লাইফে কি চান লেখায় ছিল নিজের ডেজায়ার সিস্টেম তৈরির কথা। সেইটারই এক পরের অংশ, কিছু মিমেসিসের বিরুদ্ধে প্র্যাকটিস।
যেমন,
১। আপনি যা চাইতেছেন, তা কেন চাইতেছেন? এই ডেজায়ার কার ডেজায়ার দেখে উৎপন্ন?
২। আপনে কি চাইতেছেন, সেটার আগে ভাবেন, কারে অনুকরণ করতেছেন।
৩। আপনে যদি জানেন না কারে অনুকরণ করতেছেন, তাহলে অন্ধের মত ডেজায়ারের ধান্দায় পরে লাইফ যাবে। যাহা চাই ভুল করে চাই, যাহা চাই তা পাই না অনুভব করতে থাকবেন সব সময়।
৪। কারে বা কাদের আপনে সুযোগ দিতেছেন আপনার লাইফে ডেজায়ার তৈরি করার? এই গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আপনে কাদের এক্সেস দিচ্ছেন?
৫। এদেরকে এবং এদের ডেজায়ারকে কি আপনে বিশ্বাস করেন, ও সচেতনে চাইতেছেন?
৬। এক্সেস দেয়া মানে, তাদের পোস্ট আপনার হোমপেইজে আসে। তাদের কন্টেন্ট আপনে ইউটিউবে, টিভিতে, নাটকে, সিনেমায়, খবরের কাগজে, বিজ্ঞাপনে দেখেন।
৭। ডেজায়ার তৈরি করার জায়গায় যাদের বিশ্বাস করেন না তাদের এক্সেস দিয়েন না। সবাইরে এক্সেস দিয়েন না, কারণ আপনার ডেজায়ার আপনার লাইফ নিয়ন্ত্রণ করবে।
৮। এখনই যাদের এক্সেস দিতে চান না ডেজায়ার তৈরিতে তাদের আন ফলো করুন। সেটা আমি হইলেও ওকে। আমার ডেজায়ার, অর্থাৎ আমি যা দেখাই, যে ডেজায়ার দেখাই, তা অনুকরণ আপনার জন্য ক্ষতিকর কি না ভাবুন। ক্ষতিকর হলে আনফলো দিন। আপনার ডেজায়ারের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিন।
৯। ট্রেন্ড ফলো করবেন না। ট্রেন্ড মানে কালেক্টিভ ডেজায়ার অনুকরণ। এটি আপাত সুখ দিলেও আপনার লাইফে এংজাইটি বাড়াবে।
১০। মিমেসিসের বিরুদ্ধে লাইফ মানে ট্রেন্ডের বিরুদ্ধে থাকা।
১১। এর একটা ভালো উপায় ফেসবুক বন্ধ করে দেয়া। সাময়িক, কারণ এর কিছু ভালো ইউজ আছে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে।
১২। নিজের লাইফকে সহজ করুন। আপনার যা যা জিনিশ আছে সেগুলি নিয়ে ভাবুন, এর কোনগুলা কাজে লাগে, আর কোনগুলা বেহুদা। বেহুদা অকাজের গুলা বাদ দিন।
১৩। নিজের লাইফকে বৃহত্তর কোন উদ্দেশ্যের সাথে যুক্ত করুন।
১৪। একটা সাধারণ লেখায় অনেক লাইক পাওয়া, নাকি সত্যিকার কাজের ইনসাইটমূলক একটা আলাপ শোনা যা কেউ জানবেই না, কোনটারে প্রেফার করবেন? বা সাবস্টাকে সাকুল্যে ৩ টা লাইক মিলে, ফেসবুকে মিলে বেশী, এই বিচারে কোন জায়গায় লেখা প্রেফার করব? এইরকম মিমেসিসের বিরুদ্ধের থট এক্সপেরিমেন্ট তৈরি করে ভাবুন। থট এক্সপেরিমেন্ট/ ইনটিউশন পাম্প চিন্তারে ট্রিগার করে। না দেখা জিনিশও দেখায়।
১৫। মিমেসিসের বিরুদ্ধে লাইফ যাপন করা সহজ না। সমাজের দেখাদেখি মানুষের প্রভাবিত হওয়া যেহেতু ন্যাচারাল। অথেনটিক নিজের লাইফের জন্য মিমেসিসের বিরুদ্ধে থাকার লাইফ একটা কন্টিনিউয়াস প্রক্রিয়া। আমার এই কন্টিনিউয়াস জার্নির অংশ মিমেটিক ডেজায়ার নিয়ে লেখাগুলি, এবং এই লেখা।
Comments
No posts