ইউ এস - ইন্ডিয়ার সম্পর্ক কেন খারাপ হতে শুরু করলো, এবং ভবিষ্যতে কী রকম হইতে পারে সে সম্পর্কে এক ইঙ্গিত মিলতে পারে মার্চে প্রকাশিত ইউ এস ইন্টিলিজেন্সের বাৎসরিক থ্রেট এসেসমেন্ট রিপোর্টে। এই রিপোর্টে দুই গুরুত্বপূর্ণ থ্রেটে ইন্ডিয়ার নাম উঠে এসেছে।
আপনারা হয়ত জানেন ফেন্টানল এক ভয়াবহ মাদক এবং আমেরিকার এক বড় সমস্যা। ২০২৩ সালে এর জন্য দিনে প্রায় তিনশো মৃত্যু হইছে, এবং এর পেছনে আমেরিকার খরচ প্রায় ২.৭ ট্রিলিয়ন ডলার। এই অপিওয়েড এপিডেমিক সম্পর্কে এখানে বেসিক তথ্য মিলবে।
থ্রেট এসেসমেন্টে রিপোর্টে বলা হইছে, ফেন্টানলের প্রি কার্সর ম্যাটেরিয়ালস চায়নার পরে আসছে ইন্ডিয়া থেকে।
China remains the primary source country for illicit fentanyl precursor chemicals and pill pressing equipment, followed by India.
ইন্ডিয়ার নাম অবৈধ ফেন্টানল প্রি কার্সর ম্যাটেরিয়ালস সাপ্লাইয়ের দেশ হিশেবে উঠে আসা ইউ এস- আমেরিকার সম্পর্কের গতিপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। নিশ্চয়ই এই রিপোর্ট তৈরির আগে থেকেই আমেরিকায় ইন্টিলিজেন্সের কাছে এই তথ্য প্রমাণ ছিল। আমেরিকা চাইবে ইন্ডিয়া থেকে আসা এই সাপ্লাই বন্ধ করতে।
আরেকটা অংশে উল্লেখ করেছে, পশ্চিম চেয়েছিল রাশিয়ারে আইজোলেট করতে, এর উত্তরে রাশিয়া তার ইনভেস্টমেন্ট এবং বিভিন্ন স্টেট ক্রাফটের মাধ্যমে আমেরিকার পাওয়ারের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে। চায়না নিজেদের প্রভাবের কিছুটা ক্ষতি করেও রাশিয়াকে সহযোগিতা করছে, ফলে রাশিয়া যুদ্ধ চালিয়ে যেতে এবং শক্ত এনার্জি মার্কেট ধরে রাখতে পেরেছে। রাশিয়া ইরান ও উত্তর কোরিয়ার সাথে মিলিটারি সহযোগিতা বাড়াচ্ছে।
আবার পশ্চিম সেন্ট্রিক জাতিসংঘে নিজেদের প্রভাব বাড়াতে চাচ্ছে। ব্রিকসরে (ব্রাজিল, রাশিয়া, চায়না, ইন্ডিয়া, সাউথ আফ্রিকা) নন-ওয়েস্টার্ন অর্গানাইজেশন বলে উল্লেখ করেছে, এবং বলেছে রাশিয়া এর মাধ্যমে ডি ডলারাইজেশনের জন্য চাপ প্রয়োগ করছে।
এই জায়গাতেও ইন্ডিয়ার নাম এসেছে, কারণ ব্রিকসের অন্যতম বড় প্লেয়ার ইন্ডিয়া। আর ইউ এস ডলার বেইজড সিস্টেমে যে সুবিধার ম্যানিপুলেশন করে আমেরিকা, বা এর ইন্টেগ্রিটি যে আমেরিকা ধরে রাখতে পারছে না, ইন্ডিয়া বা অন্যান্য বড় দেশ এই ব্যাপারে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি না।
পশ্চিম তথা আমেরিকা থেকে প্রধান এক চাপ এসেছিল ইন্ডিয়ার প্রতি রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে, ইন্ডিয়া তা নেয় নাই। ইন্ডিয়ার পেট্রলিয়াম ও ন্যাচারাল গ্যাস মিনিস্টার হারদ্বিপ সিং পুরীর সাথে বিবিসি নিউজ ইন্ডিয়ার এই স্বাক্ষাতকার দেখতে পারেন, এটা প্রকাশ্য হবার দিন আমি ফেসবুকে একটা ছোট নোট সহ শেয়ার করেছিলাম। এখানে লক্ষ করবেন, ইন্ডিয়ার উপর রাশিয়া নিয়ে পশ্চিমা প্রেশার বা প্রশ্নগুলা কী, ও ইন্ডিয়ার অবস্থান কী।
মার্চ ১৯-২৩ তারিখ, ২০২২ সালে ইউ এস আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড বাংলাদেশ-ভারত-শ্রীলঙ্কা ট্রাই ন্যাশন ভিজিটে এসেছিলেন, যার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ইউ-এস ন্যাটোর পক্ষে এদের দাঁড় করানো। কিন্তু বাংলাদেশ রাশিয়ার সাথে রুপপুরের বিশাল পারমাণবিক চুল্লী চুক্তিসহ, নানা বন্ধনে আবদ্ধ। যেহেতু ইন্ডিয়া স্পষ্টভাবে অবস্থান নেয় নি রাশিয়ার বিরুদ্ধে, আমেরিকার প্রেশার বজায় থাকবে।