নন ভার্বাল কম্যুনিকেশন বুঝার ক্ষেত্রে আমরা মানুষেরা একেবারে খারাপ না। লজিক্যালি এইটা হওয়া অসম্ভব। কারণ মানুষ হিশাবে আমাদের যে এভলুশন, এতে কম্যুনিকেশনের এক বড় অংশই ছিল নন ভার্বাল, সেই আদি থেকে।
ভাষা তো জন্ম নিছে পরে, আগে মানুষ তার আবেগ প্রকাশ করতো মুখের নানা অংশ, হাত ইত্যাদির মুভমেন্টের মাধ্যমে। ভাষা উন্নত হবার সাথে সাথে স্বাভাবিক ভাবেই অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মুভমেন্ট দিয়া আবেগ প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা কমে গেছে।
এটারে এভাবে ভাবতে পারেন। দ্য গ্রেট চার্লি চ্যাপলিন নন ভার্বাল কম্যুনিকেশনের মাস্টার। কারণ ওই সময়ে সাইলেন্ট ফিলিম ছিল। তার সকল আবেগ প্রকাশ করতে হইত এক্সপ্রেশন, হাত পায়ের মুভমেন্ট ইত্যাদির মাধ্যমে।
এখন প্রযুক্তির কারণে সাউন্ড আসছে, কালার আসছে। ফিলিমে অভিনেতা অভিনেত্রীরা বাতচিত করতে পারেন। ফলে সাইলেন্ট ফিলিমে নন ভার্বাল কম্যুনিকেশনের যে মাস্টারি দরকার ছিল, এখন সেইরকম না। কিন্তু একেবারে নাই তা না। অভিনয় যে মানুষ শিখে, কি শিখে? খালি রোবটের মত ডায়লগ ডেলিভারি দেয়া? অবশ্যই না, ওই চরিত্র হইয়া উঠা, চরিত্রটা যা করবে তা করতে শেখা, আবেগ প্রকাশ করার জন্য মুখের এক্সপ্রেশন, অঙ্গ প্রত্যঙ্গের নাড়াচাড়া এইগুলাও শিখে।
একইভাবে, ভাষা উন্নত হবার পরেও মানুষদের মধ্যে আবেগ অনুভূতি প্রকাশের জন্য বডির মুভমেন্ট এক গুরুত্বপূর্ণ কমিউনিকেশনের টুল।
দেখবেন, কিছু মানুষরে আমরা বলি ইন্টুইটিভ, বা এরা কীভাবে জানি অনেক কিছু বুঝে ফেলে, ধরে ফেলে। একটা জিনিশ সবাই একরকম দেখতেছে, বুঝতেছে, কিন্তু একই কনভার্সেশন থেকে অন্য আরেকজন দেখা যায় ভিন্ন এক জিনিশ দেখে ফেলে।
এইটা কীভাবে হয়?
সে কোন ভাবে নন ভার্বাল বডি মুভমেন্টগুলা পড়ে ফেলতে পারে। অথবা, ঘটতে থাকা বাস্তবতায় এমন কোন দিকে খেয়াল করতে পারে যা অন্যরা দেখে না।
শার্লক হোমসের দ্য এডভেঞ্চার অব সিলভার ব্লেইজ এর কুত্তার ঘটনাটার মত। শার্লক হোমস তুলতেছিল কুত্তার কথা। তখন ইন্সপেক্টর গ্রেগরি বলে, তুমি এইটারে গুরুত্বপূর্ন ভাবতেছ নাকি?
শার্লক কয়, অবশ্যই!
গ্রেগরি বলে, কী বিষয়, আমারে এই বিষয়ে কিছু বলতে চাও?
শার্লক বলে, দ্য কিউরিয়াস ইন্সিডেন্ট অব দ্য ডগ ইন দ্য নাইট টাইম।
অর্থাৎ, কুত্তার সেই রাতের কৌতূহল উদ্দীপক ঘটনাটা।
গ্রেগরি বলে, কুত্তা তো কিছু করেই নাই!
শার্লক বলে, সেইটাই তো কৌতূহল উদ্দীপক ঘটনা। কুত্তা কেন কিছু করলো না!
তার মানে যে লোক দোষী, সে কুত্তার পরিচিত ছিল। এইভাবে শার্লক হোমস একটা সহজ জিনিশের মত ভিন্ন ঘটনা দেখতে পায়, যা গ্রেগরি বা অন্যরা দেখে নাই।
একইরকম, কিছু মানুষ নন ভার্বাল বডি মুভমেন্ট পড়তে পারে, সিগন্যাল ও সিগন্যালিং ধরে ফেলে। অনেকে জন্মগত ভাবেই এই ক্ষমতা অর্জন করে ফেলে।
যেমন, মহিলাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বুঝার ক্ষমতা পুরুষদের চাইতে অনেক বেশী। ব্যাড ইন্টেন্ট নিয়া কেউ তাকাইলে, বা কিছু করতে চাইলে বেশীরভাগ মহিলারাই তা অনুভব করতে পারেন। এই ক্ষমতা তাদের হইছে এভলুশনের কারণে।
পুরুষদের মধ্যে যারা আর্টিস্ট, লেখক, যারা অভজার্ব করার মত পেশায় থাকেন, তাদের এই ক্ষমতা মহিলাদের মত হতে পারে।
অনেকের ক্ষেত্রে খুবই বেশী হয়। আমরা একধরণের লোকদের চিনি, যারা হাত দেখে অনেক কিছু বলে দেয়, সিয়ার, এদের সবারই বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, সিগন্যাল পড়ার ক্ষমতা অনেক বেশী থাকে।
মানুষ প্রাচীনকাল থেকেই এই বডি ল্যাঙ্গুয়েজের ব্যাপার নিয়ে চিন্তা করেছে, ব্যবহার করেছে। বলা যায়, ইংরেজিতে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বিষয়ে প্রথম বিস্তারিত বই দার্শনিক ও ডাক্তার জন বুলারের ( ১৬০৬-১৬৫৬) এর চিরোলজিয়াঃ দ্য ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ অব দ্য হ্যান্ড, ১৬৪৪ সালে প্রকাশিত।
১৮৭২ সালে চার্লস রবার্ট ডারউইন তার দি এক্সপ্রেশন অব ইমোশন ইন ম্যান্ড এন্ড এনিমেলস বইতে আবেগ প্রকাশে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ নিয়ে আলোচনা করেছিলেন, এবং তিনি মানুষ, এপ এবং বানরের এইসব ইমোশন প্রকাশের মিল দেখিয়েছিলেন।
এর পরে নানা দিক থেকে মানুষের, প্রাণীদের আচরণ, সিগন্যাল বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বডি ল্যাঙ্গুয়েজে ১৯৬৭ সালে গ্রাউন্ডব্রেকিং রিসার্চ পাবলিশ করেন সাইকলজিস্ট আলবার্ট মেহরাবিয়ান, ইনফারেন্স অব এটিচ্যুড ফ্রম নন ভার্বাল কম্যুনিকেশন ইন টু চ্যানেলস নামের পেপারে।
সেখানে তিনি এই ইকুয়েশন দেন,
টোটাল আবেগ/ এটিচ্যুড = ৭% ভাষায় + ৩৮% ভোকাল + ৫৫% ফ্যাসিয়াল
ধরেন, এক বন্ধু আরেক বন্ধুরে হেসে হেসে গালি দিচ্ছে, আমরা দর্শকেরা সেই দৃশ্য দেখলাম। এই দৃশ্যটা পজেটিভ ভাবে গৃহীত হবে। বন্ধুর কাছেও।
আবার, একই গালি যদি রাগান্বিত মুখাবয়বে দেয়, তাহলে সেটা নেগেটিভ ইমোশন প্রচার করবে।
নন ভার্বাল কম্যুনিকেশন স্টাডির ক্ষেত্রে আরেকজন গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তি এন্ত্রোপলজিস্ট রে বার্ডউইস্টেল। তিনি বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, জেশ্চার পশ্চার ইত্যাদি পড়ার স্টাডির নাম দেন কাইনেসিকস। কয়েক দশক ধরে কাজ করে এই বিষয়ে তিনি যেইসব চিন্তা করেন, তা ১৯৫২ সালে কাইনেসিকস এন্ড কনট্যাক্সট বইতে প্রকাশ করেছিলেন।
ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন বিষয়ে আরেকটা ইন্টারেস্টিং ডেভলাপমেন্ট বিজ্ঞানী পল অকম্যান ও ডব্লিউ বি ফ্রিজেনের ফেসিয়াল কোডিং সিস্টেম। আর এখন তো আধুনিক প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে মানুষের মুখের নড়াচড়া, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ এনালাইজ করার চেষ্টা হচ্ছে।
বডি ল্যাঙ্গুয়েজ পড়ার ক্ষেত্রে ভুলের জায়গা থাকে। তাই কেবলমাত্র এর উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না। বরং এটি সহকারী হিশেবে কাজ করে।
জীবনে প্রায় সময়ই এমন সব মুহুর্ত আসে যখন খুব কম তথ্যের উপর ভিত্তি করে অল্প সময়ের মধ্যে কাউকে বিচার করতে হয়, সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যেমন জব ইন্টার্ভিউ, বা কোন স্টার্টাপে ইনভেস্ট করার ক্ষেত্রে ফাউন্ডারদের সাথে আলাপ।
আপনি দেখলেন একজন জব ইন্টার্ভিউতে তিনি কেন আগের জব ছেড়েছেন এই প্রশ্নের উত্তরে বললেন, ওইখানে গ্রোথ অপরচুনিটি ছিল না তাই বেটার অপরচুনিটি খুঁজতেছেন।
ভালো উত্তর।
কিন্তু আপনি খেয়াল করলেন পূর্বের বস ও ওয়ার্কপ্লেস নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তার মুখ শক্ত হয়ে যাচ্ছে, তিনি মুখ হাত দিয়ে স্পর্শ করছেন।
এটি কিছুই না বলে আপনি ইগনোর করতে পারেন।
অথবা, এটি আপনার মনে সন্দেহ তৈরি করতে পারে, আপনি আরেকটু খোঁজ নিতে পারেন। হয়ত দেখা গেল, তিনি আগের কাজ থেকে করাপশনের জন্য ছাঁটাই হয়েছেন।
কনটেক্সট গুরুত্বপূর্ণ। কী কনটেক্সট কনভার্সেশনটা হচ্ছে, এখানে কী কী ইমোশন জড়িত তা জানা থাকলে আপনি বডি মুভমেন্টগুলি একসাথে মিলিয়ে বুঝতে পারবেন। কিন্তু যদি ধরে নেন হাত এইভাবে রাখা মানে এইটা, এবং সব সময়ই এমন হবে, তা নয়। এটি বস্তু যেমন আছে তেমন ভাবে দেখতে বাঁধা দেবে।
উদাহরণ হিশেবে অভিনেতা ও উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয় ও অভিনেত্রী অপু বিশ্বাসের সাম্প্রতিক টকশো নিয়ে বলি, যা চ্যানেল আইয়ের ফেসবুক পেইজে প্রকাশিত হয়েছে। এখানে আমরা কনট্যাক্সট বেশ ভালোভাবেই জানি, এবং এই কনভার্সেশনে কী ইমোশন থাকতে পারে তা বুঝতে পারতেছি। তাই, এখানে বডি ল্যাঙ্গুয়েজের ক্লাস্টার, প্যাটার্ন ও অর্থ ধরতে পারা সহজ হবে।
এই ইন্টার্ভিউয়ের প্রায় পুরা টাইমে অপু বিশ্বাসের এক হাত আরেক হাতের সাথে ছিল। উনি ভেতরে স্ট্রেস, এবং ভয় অনুভব করতেছেন, কারণ জয় এর প্রশ্নের কী উত্তর দিবেন, ও জয় কী প্রশ্ন করবেন।
সম্ভবত এই ১৯ মিনিটের ইন্টার্ভিউ আরো লম্বা সময়ের ছিল। এই ১৯ মিনিট দেয়া হইছে। হয়ত কথাবার্তা শুরু হবার পরে তার মধ্যে এই নেগেটিভ ইমোশন চলে আসছে। তিনি জয়ের সাথে আই কন্টাক্ট খুব কম করেছেন।
অপুর এই দুই হাত এক করে রাখা তার এইটাও বুঝাইতে পারে, ভেতরে তিনি নেগেটিভ ইমোশন, রাগ, বিরক্তি আটকে রাখতেছেন। আর বাইরে অভিনয় করে যাচ্ছেন। ফিল্মের প্রমোশনের জন্য।
দেখবেন, জয় অপুর দিকে আঙ্গুল দিয়ে নির্দেশ করতেছেন দুয়েকবার। এইটা অভিযোগের। তিনি তো অভিযোগের মাল মশলাগুলাই নিয়া বসছেন।
আবার, অপুও দুইবার অঙ্গুলি নির্দেশ করছেন। কখন? একবার, যখন তিনি বুবলির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। আর দ্বিতীয়বার, যখন জায়েদ খানের সাথে তার সম্পর্ক কী ছিল এই নিয়া প্রশ্ন আসে। তার এই দ্বিতীয় অঙ্গুলি নির্দেশরে পড়া যাইতে পারে, ওইখানে জায়েদের দোষ ছিল হিশাবে।
জয়ের আরেকটা ব্যাপার খেয়াল করতে পারেন, অপু উত্তর দেবার সময়ে তিনি নিজের মুখে, ঠোঁটের নিচে হাত দিয়া নাড়তেছেন, এই সময়ে তিনি ভাবতেছেন ক্যামনে অপু বিশ্বাসরে আঁটকানো যায়। জয়ের আরেকটা হাতের অবস্থান ছিল, হাতের বুড়ো আঙ্গুল আর কড়ে আঙ্গুল ঘষতে থাকা যখন অপু উত্তর দিতেছেন, অর্থাৎ উত্তর তিনি অত শুনতেছেন না, তার টার্গেট কীভাবে আটকানো যায়।
জয় একটা জায়গায় শুধু নিজের দুই হাত এক করছেন, যখন ধর্ম চেইঞ্জ করছিলেন কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে অপু বিশ্বাস না বললেন। জয় এই উত্তর পুরাটাই নেন নাই, তাই হাত দুই হাত এইরকম হয়ে গেছিল ঐ সময়ে। ভেতরে ভেতরে তিনি হয়ত বলতেছিলেন অন্য কথা, যে এইটা তো ডাহা মিথ্যা কথা!
বুবলি কান্নাকাটি করছেন, তার বিষয়ে বাঙালী নারীরা সহানুভূতি জানাইছেন, এই তার নিয়া সহানুভূতি হয় কি না, জয়ের এই প্রশ্নের উত্তরে অপু, কপাল চুলকাইলেন, বিস্তারিত ভাবে চুলে হাত দিয়া চুল ঠিক করলেন ও বাঁকা চোখ দিয়া তাকাইলেন। তার পর মুখ দিয়া এক উত্তর দিলেন। কিন্তু তার এই চুল ঠিক করা অন্য কথা বলছে, তার তখন নেগেটিভ ইমোশন, রাগ, বিরক্তি এতো বেশী হয়ে যায়, এটা কন্ট্রোল করতেই তিনি চুলে হাত দেন। এর আগে কপাল চুলকাইতেছিলেন কারণ বুঝতে পারতেছিলেন না কী বলবেন, বা কীভাবে সামলাবেন। সম্ভবত অপু যখন বাচ্চা ছিলেন তখন তার মা তারে এইভাবে মাথায় হাত দিয়া আদর করতেন বা শান্ত করতেন।
সবচাইতে বেশী তিনি নার্ভাস হইছেন জয় যখন জিজ্ঞেস করবেন, আপনি যদি আবার বিয়ে করেন... এই জায়গায় অপু প্রথমে অস্বাভাবিক ভাবে হেসে দেন, পরে লাইন ছাইড়া দর্শকদের সম্বোধন করে ফেলেন অবস্থা সামলাতে। এর অর্থ দাঁড়ায়, তিনি খুবই নার্ভাস এই মুহুর্তে। হয়ত শাকিবের লগে সম্পর্ক ঠিক করতে থাকার এই মুহুর্তে তিনি এমন সম্ভাবনার কথা আনতেও চান না। আর জায়েদের বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে তার এই অতিরিক্ত নার্ভাস হয়ে যাওয়া, বা জয় শাবনুরের কথা তুলে আনা এই কনভার্সেশনের এক ইন্টারেস্টিং ডেভলাপমেন্ট ছিল। আরেকটা নায়কের সাথে গুঞ্জনের ব্যাপারে প্রশ্ন আসলে, তিনি ক্লিয়ারলি তার ব্যাখ্যা দেন। আমাদের প্রিয় জায়েদ খানের প্রসঙ্গে তিনি এটা পারেন নাই। পারসুয়েশন স্পেশালিষ্ট, বিখ্যাত লেখক স্কট এডামস জানাইছিলেন, কেউ যখন অপরাধ করে নাই, সে সরাসরি ডিনাই করবে। কিন্তু করে থাকলে বলবে, কী প্রমাণ আছে? অন্য কথা আনবে।
বডি ল্যাংগুয়েজ এনালাইসিস বেশী করা হয় রাজনীতিতে, জিওপলিটিক্সে। সেইখানে নন ভার্বাল কম্যুনিকেশনের গুরুত্ব অনেক, নেতাদের ট্রেইনিং দেয়া হয়। বডি ল্যাঙ্গুয়েজের মাধ্যমে বিভিন্ন জিনিশ বুঝানোর প্রক্রিয়া তারা আয়ত্ত্ব করে নেন। এছাড়া তারা কিছু কর্মকান্ড করে থাকেন জেশ্চার পশ্চারের বাইরে, যেগুলি নন ভার্বাল মেসেজ প্রদানের বা তথাকথিত মাইন্ড গেইমের অংশ হয়ে থাকে। যেমন নিচের ছবি, ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসের, রাশার প্রেসিডেন্ট পুতিন জার্মানির চ্যান্সেলর এঞ্জেলা মার্কেলের সাথে স্বাক্ষাত করছেন। সাথে নিয়ে গেছেন তার বড় কালো কুকুর।
এঞ্জেলা মার্কেলকে ভীত দেখাচ্ছে। কারণ ১৯৯৫ সালের এক ঘটনার পর থেকে তিনি কুকুর ভয় পেতেন। পুতিন এখানে এঞ্জেলা মার্কেল এবং বিশ্ব মিডিয়ার সাথে সাইকোলজিক্যাল গেইম খেলছিলেন।
মার্কেল পরে বলছিলেন, “I understand why he has to do this – to prove he’s a man. … He’s afraid of his own weakness. Russia has nothing, no successful politics or economy. All they have is this.”
নন ভার্বাল কম্যুনিকেশন কোন কোন কনট্যাক্সট বেশী গুরুত্বপূর্ণ হয়। প্রায় সব মানুষই সাধারণ নন ভার্বাল তথ্য আদান প্রদান করে থাকেন ও বুঝে থাকেন। আমি অভিনেতা মাহফুজ ও নাসির উদ্দিনের যে ইন্টার্ভিউ এনালাইসিস করেছিলাম, তা ছিল পপ কালচার বিশ্লেষণের অংশ। যেকোন এনালাইসিসে আমি কখনো দেখা যায় এভলুশনারি সাইকোলজি থেকে, কখনো জিওপলিটিক্স থেকে, কখনো ঐতিহাসিক দিক থেকে, ইত্যাদি ভাবে এনালাইজ করি, এবং একটা পয়েন্ট দেখাই। ওই পোস্ট সেইরকমই ছিল। এটি অনেক মানুষের সামনে চলে যায় ঘটনাক্রমে। এখন, এই বিষয়ে অনেকের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। আমি এখানে সতর্কতা হিশেবে বলব, মনে রাখতে হবে, সাইকোলজি ফিল্ডটা ‘ওইরকম সাইন্স’ না, এখানে রেপ্লিকেশনের সমস্যা আছে। তাই, ওপেন থাকা জরুরী।
আর সাধু হবার পথ তো আপনি জানেনই, যেমন আছে তেমনই দেখতে পারা।
https://www.facebook.com/watch/?v=749728896990119