ভূমিকাঃ
ইন্টারনেটের এই সময়ে একজন মানুষ প্রতিদিন প্রচুর তথ্য কনজিউম করেন। নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতে, গড়ে একজন মানুষের প্রতিদিন কনজিউম করা তথ্যের পরিমাণ এখন ৩৪ গিগাবাইট! টাইম ম্যাগাজিনের এক স্টাডি অনুমান করেছিল, গড়ে একজন মানুষ ১৭৪ টা পূর্ণ পত্রিকার তথ্যের সমপরিমাণ তথ্য গ্রহণ করেন প্রতিদিন।
এই যে প্রচুর তথ্য আপনি পাইতেছেন, প্রতিটা স্ট্যাটাসে, ছবিতে, বিজ্ঞাপনে সব জায়গাতেই, এর মধ্যে কাজের অনেক কিছুই থাকে। কিন্তু মানুষ কাজে লাগাইতে পারেন না বেশীরভাগ ক্ষেত্রে।
অনেকে দেখা যায় পড়েন, বই পড়েন, ভালো ডকুমেন্টারি দেখেন কিন্তু তার মনে থাকে না। তিনি কাজে লাগাইতে পারেন না।
নিজের নলেজ ম্যানেজ করতে পারা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি যদি ঠিকঠাক জানেন কোন জায়গায় আপনার কী নলেজ, আইডিয়া আছে, তখন আপনি নলেজরে কাজে লাগাইতে পারবেন।
নলেজরে কাজে লাগানোর একটা প্রধান বিষয়, বিভিন্ন আইডিয়াকে কানেক্ট করতে পারা।
আইডিয়ারে কানেক্ট করতে হলে আইডিয়াগুলা আপনার মনে থাকতে হবে, বা সামনে থাকতে হবে।
পার্সোনাল নলেজ ম্যানেজমেন্ট একটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিশ। আগেকার অনেক লেখক দার্শনিকদের ক্ষেত্রে দেখবেন, যেমন লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি, সোরেন কীয়ের্কেগার্ড, ফ্রাঞ্জ কাফকা, ভার্জিনিয়া উলফ, জন লক এরা প্রায় সবাই নোটবুক রাখতেন। সেই নোটবুকে বিভিন্ন আইডিয়া, চিন্তা, উপলব্ধি লিখে রাখতেন।
এই নোটবুকগুলি তাদের দ্বিতীয় ব্রেইন হিশাবে কাজ করতো।
এখন, এই তথ্যের অভারলোডের সময়ে, আপনি যদি চান নলেজরে নিজের কাজে লাগাতে, তাহলে আপনারও এমন এক ব্যক্তিগত নলেজ ম্যানেজ করার সিস্টেম ডিজাইন ও মেইন্টেইন করতে হবে।
অন্যথায় অনেক পড়বেন, শুনবেন, দেখবেন, কিন্তু কিছু মনে থাকবে না কাজের সময়।
আমার ডিজিটাল গার্ডেন
আমি আমার দ্বিতীয় ব্রেইন হিশাবে আমার সাইটরে ডিজাইন করছিলাম। এটা মূলত, আমার চিন্তা, বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া আইডিয়া, ইনসাইট, উপলব্ধি ইত্যাদি জড়ো করে রাখার জায়গা। একটা ডিজিটাল গার্ডেন।
আমি সব সময় চাইছি নলেজরে কাজে লাগাইতে। কারণ, নিজের কাজে যদি লাগাইতে না পারা গেলো, সেই নলেজ তো অকাজের, গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন।
সাইটে লেখা আছে ৬৪০ টা। ফেসবুকে নিয়মিত চিন্তা/ মন্তব্য লেখছি, সেইগুলার একাংশ আরেক সাইটে রাখছি। এছাড়া, বিভিন্ন নোট টেকিং এপে ছোট বড় বিভিন্ন ড্রাফট রাখছি।
এইগুলার ফলে, আমার জন্য বিভিন্ন আইডিয়া কানেক্ট করা সহজ হয়। মূল কাজটা করছে সাইট, সেইখানে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে লেখাগুলা ছিল। লেখাগুলা লেখতে গিয়া ঐ আইডিয়াগুলার বিষয়ে চিন্তার চর্চা হইছে। ফেসবুকের লেখাগুলা ছিলো সবচাইতে বিশৃঙ্খল। কিন্তু এইগুলারে একত্র করার চিন্তাটা কাজের ছিলো।
যখন এইগুলা একত্র করে আরেক সাইটে প্রকাশ করতে গেলাম, তখন দেখলাম কত কিছু নিয়াই চিন্তা করছি বিভিন্ন সময়ে।
সেকন্ড ব্রেইন বানানোর প্রক্রিয়া
আরো সুশৃঙ্খল ভাবে দ্বিতীয় ব্রেইন বানানোর ইচ্ছা হয়েছিল, যখন দুই বছর আগে প্রথম সেকন্ড ব্রেইন সম্পর্কে জানলাম।
সেকন্ড ব্রেইনের ধারণাটা একেবারে নতুন না। বিভিন্ন কালচারে এইরকম কাছাকাছি চিন্তা আছে। এটা পার্সোনাল নলেজ ম্যানেজমেন্টের একটা কার্যকর উপায়।
আপনি যা জানতেছেন, যে নলেজ সংগ্রহ করতেছেন তারে এমনভাবে ম্যানেজ করা যাতে এগুলি কাজে লাগাতে পারেন। যেন ব্রেইনের একটা সাহায্যকারী টুল হয়ে অবস্থান করে।
তিয়াগো ফর্তে নামে একজন লেখক সেকন্ড ব্রেইন বিষয়ে একটি বই লিখেছেন। তিনি এখন এই বিষয়ে কোর্স করান, লেকচার দেন।
সেকন্ড ব্রেইন চারটা মূল দিকে আপনারে হেল্প করবে।
১। আপনার আইডিয়াগুলারে একটা শক্তিশালী রূপ নিতে সাহায্য করবে।
২। বিভিন্ন আইডিয়ার মধ্যে সম্পর্ক আপনি দেখতে পাবেন সহজে।
৩। ফোকাসে সাহায্য করবে, আপনে দীর্ঘদিন আইডিয়াগুলা নিয়া কাজ করতে পারবেন।
৪। আপনার ইউনিক ভিউ তৈরি, ক্রিটিক্যাল চিন্তা করার ক্ষেত্রে হেল্প করবে।
নোট/ আইডিয়া সংগ্রহের ধাপ চারটা।
এক, ক্যাপচার করা। কোন কাজে লাগার মত, ইন্টারেস্টিং তথ্য পেলে আপনার এটি সংগ্রহ করে রাখতে হবে। মনে রাখার ভরসায় থাকলে হবে না কারণ মানুষের মনে থাকে না।
দুই, অর্গানাইজ করা তথা ঠিক ভাবে সাজানো।
তিন, ডিস্টিল অর্থাৎ, আইডিয়ার এসেন্সটা ধরা, ও সেই অনুসারে আইডিয়া জমা রাখা। এসেন্স ধরা বলতে, ধরা যাক, আপনে ডেজায়ার নিয়া পড়তেছেন রেনে জিরার্দের লেখা, এবং বুঝতে পারলেন ফিলোসফির লেখা হলেও এটা আপনার বিজনেসে ব্যবহার করা যায়। কারণ এর এসেন্স, আপনার বিজনেসের সাথে যায়। আইডিয়ার এসেন্স ধরতে হলে আইডিয়ারে সামারাইজ করতে হবে, এবং ব্যবহারের জায়গা দেখতে হবে, এবং অন্য আইডিয়ার সাথে যুক্ত করার চেষ্টা করতে হবে।
আর চার নাম্বার ধাপে এক্সপ্রেস। অন্যদের সাথে শেয়ার করা। এতে অন্যদের চিন্তায় হেল্প হয়, এবং নিজের কাজও বেটার হয়। মানব সভ্যতায় নলেজের সৌন্দর্য হচ্ছে এটি অন্যদের সাথে শেয়ার করা যায়। একজন মানুষকে সবচাইতে ভালোভাবে সাহায্য করার উপায় তাকে জানতে সাহায্য করা। নলেজ দ্বারাই মানুষ তার লাইফ বদলাতে পারে। জ্ঞান লুকিয়ে রাখা কুৎসিত।
আপনি যেসব নোট, ইনসাইট রাখবেন, এগুলি অর্গানাইজ করতে চারটা ভাগে ভাগ করে রাখতে পারেন। এটার নাম দেয়া হইছে পারা মেথড। পারা গ্রীক শব্দের অর্থে পাশাপাশি।
প্রজেক্ট
এরিয়াজ অব ফোকাস
রিসোর্স
আর্কাইভ
এই চারটা ভাগে।
প্রজেক্ট ফোল্ডারে আপনার শর্ট টার্ম প্রজেক্ট গুলার নাম থাকবে।
ধরা যাক আপনার একটা শর্ট টার্ম প্রজেক্ট তিন মাসের মধ্যে মাইক্রোসফট এক্সেল শিখা।
আপনি ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে করতে হঠাত একটা ফেসবুক রিল বা টিকটক ভিডিও পাইলেন, ভালো একটা এক্সেল টিপের। আপনি ঐটার সারমর্ম ও লিংক রাখতে পারেন প্রজেক্ট ফোল্ডারের মধ্যে থাকা "মাইক্রোসফট এক্সেল তিন মাসের মধ্যে শিখব" এই প্রজেক্টের ফোল্ডারে।
দ্বিতীয় মূল ফোল্ডার, এরিয়াজ অব ফোকাস। এগুলা হবে আপনার লং টার্ম প্রজেক্ট বা রেস্পন্সিবিলিটির জায়গা। যেমন,
ফিটনেস
ব্যবসা
ইত্যাদি।
ব্রড না হয়ে স্পেসিফিক ফোকাস এরিয়া হতে পারে। যেমন বিজনেস একটা ব্রড এরিয়া, কিন্তু ইকমার্স ব্যবসার ভেতরে অপেক্ষাকৃত ছোট এক ফোকাস এরিয়া হতে পারে।
আপনি আপনার ফোকাস এরিয়াতে থাকা জিনিশগুলা সম্পর্কে কাজের কিছু জানতে পারলে, নিজে কোন ইনসাইট পাইলে এই ফোল্ডারের মধ্যে রাখবেন।
তারপরের মূল ফোল্ডার রিসোর্স। এখানে থাকবে ঐ সব জিনিশ ও টপিক, যেগুলাতে আপনি লং টার্মে ইন্টারেস্টেড, ফিউচারে কাজে লাগতে পারে, এমন।
শেষ ফোল্ডার আর্কাইভ। কোন প্রজেক্ট শেষ হয়ে গেলে, বন্ধ হয়ে গেলে, বা কোন রিসোর্সের প্রয়োজনীয়তা শেষ হলে আর্কাইভে জমা করে রাখতে পারেন।
আমার নতুন বানানো নলেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা সেকন্ড ব্রেইনের স্ট্র্যাকচার নিম্নরূপ।
আদার নামে আরেকটা ফোল্ডার রেখেছি, পুরানো কিছু নোট রাখতে।
প্রজেক্ট ফোল্ডারের ভেতরে দেখি, কীরকম শর্ট টার্ম প্রজেক্ট গুলা রাখা আছে।
নন ফিকশন বুক, একটা বই লেখা চলছে। এই বইয়ের থিমের সাথে যায় এমন আইডিয়া, চিন্তা, ইনসাইট এখানে থাকবে।
থ্রিলার উপন্যাস, একটা থ্রিলার উপন্যাস লেখা শুরু করেছিলাম ২০২১ সালে। এর সাথে যায় এমন চিন্তা, আইডিয়া এই ফোল্ডারে থাকবে।
মেন্টরশীপ, মেন্টরশীপ প্রোগ্রামে যারা আছেন তাদের কী কী বিষয়ে হেল্প করা যায়, এই সংশ্লিষ্ট আইডিয়া এই ফোল্ডারে।
সাবস্টাক নিউজলেটার, এটা হচ্ছে এই নিউজলেটারে লেখার আইডিয়া। পড়তে গিয়ে কোন আইডিয়া পেলাম, মনে হলো এটা দিয়ে লেখা যায়, এইরকম আইডিয়া এখানে থাকবে।
নিচে প্রজেক্টগুলারে টুডু আকারে রাখছি।
যদি আমি এরিয়াজ অব ফোকাসে যাই, এর ভেতরের ছবি এইরকম।
এখানে, এই বিষয়াবলীর সাথে যুক্ত আইডিয়া, চিন্তা স্থান পাবে। বেশী বিষয় দিয়ে ভরে ফেলতে চাই না, একটা মিনিমালিস্ট রূপে রাখতে চাই। এই এরিয়াগুলাই মূলত লং টার্মে আমার ফোকাসের জায়গা।
লং টার্মের ফোকাসের জায়গা কি বের করতে আপনি আপনার লাইফ কীভাবে চান বা লাইফে কী করতে চান এই বিষয়ে প্রশ্ন করুন ও বের করুন। একেকজনের জন্য একেকরকম হতে পারে। আমার এখানে আছে ফিলোসফি, কারণ নলেজের প্রতি আগ্রহ আমার প্রধান ড্রাইভ। সাহিত্য আছে, যেটা আমার ক্রিয়েটিভ কাজ। এড টেক, প্রগ্রামেটিক, পিডিওওএইচ এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স পেশা। ক্রিপ্টো/ ব্লকচেইন, অপশন ট্রেডিং, ইনভেস্টিং আমার ওয়েলথ জেনারেশনের জায়গা। এইভাবে ইন্টারেস্টগুলারে আমি স্ট্রাকচারাইজড করলাম।
আমি কোন এপ ব্যবহার করি
সাধারণত, বই নোট কম কার্যকর হয়, কারণ সেটা আরেকটা বইয়ের মতোই কাজ করে। যদিও নোটবুক রাখা না রাখার চাইতে অনেক ভালো, কিন্তু এখানে নোটগুলি শৃঙ্খলা বদ্ধ ভাবে থাকে না।
আপনি পড়তে গেলে, এক পাতায় পড়বেন ইতিহাসের আইডিয়া, আরেক পাতায় সাহিত্য, আরেক পাতায় হয়ত ক্রিকেট। এবং এইগুলা কোন একশন ওরিয়েন্টেড প্রজেক্টের সাথে যুক্ত থাকে না।
এর চাইতে কার্যকর হয়, যদি স্পেসিফিক ভাবে রাখা যায়।
আধুনিক নোট রাখার প্রযুক্তি সেই সুবিধা দিয়েছে। প্রায় যেকোন নোট টেকিং এপে আপনি ডায়নামিক ভাবে ইমেজ, ভিডিও, পিডিএফ ইত্যাদি সমেত নোট রাখতে পারবেন আলাদা আলাদা বিষয় অনুসারে। নোটগুলার মধ্যে কানেকশন রাখতে পারবেন।
আমি রেমনোট ব্যবহার করি। কারণ এর ফিচারগুলি অন্যান্য এপের চাইতে আমার কাছে বেশী ভালো লেগেছে।
আইডিয়া রাখার সময়ে আমি বিস্তারিত বা অনেক বড় লেখার আকারে রাখি না।
শুধুমাত্র একশনেবল আইডিয়ার আকারে থাকে।
কারণ, এই সেকন্ড ব্রেইন আরেকটা বই না, বরং এটা ব্রেইনের সাহায্যকারী হিশেবে কাজ করবে।
যেমন, ধরা যাক, আমি পড়লাম পারেতো প্রিন্সিপল সম্পর্কে একটা লেখায়। ৮০ ভাগ ফলাফলের কারণ থাকে ২০ ভাগ কাজ।
পুরা লেখা পড়ার পর আমার মনে হলো এটা আমার মেন্টরশীপ প্রজেক্টে ব্যবহার করা যায়।
আমি তখন মেন্টরশীপ ফোল্ডারে একটা নোট এড করব, ৮০/২০ রুল বা পারেতো প্রিন্সিপল সম্পর্কে শেখাতে হবে। সাথে ওই লেখার লিংক থাকতে পারে।
বা ধরা যাক আমি যাদুবিদ্যার সেই মহা ভয়ংকর বই, শামস আল মা’আরিফ সম্পর্কে পড়লাম, আমার মনে হলো এটি আমার থ্রিলার উপন্যাসে ব্যবহার করা যাবে। তখন আমি থ্রিলার উপন্যাস ফোল্ডারে নোট রাখলাম, "শামস আল মাআরিফ বইটারে উপন্যাসের বৃদ্ধ আলকেমিস্টের সাথে যুক্ত করতে হবে।"
বা, এই লেখা পড়ে ধরা যাক কেউ নোট নিবেন, তিনি কি পুরা লেখাটা কপি করে নোটে রাখবেন? না, এতে সেকন্ড ব্রেইনের উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে, তথ্যের অভারলোড হয়ে যাবে একসময় বড় বড় লেখায়। তিনি এখান থেকে একশনেবল পয়েন্ট টা নিবেন। যেমন, তিনি প্রজেক্টে যোগ করতে পারেন, এপ্রিল মাসের মধ্যে সেকন্ড ব্রেইন বানাবো, ও ব্যবহার শুরু করব। সেই ফোল্ডারে এই লেখার মূল ইনসাইট দুই দশ লাইনে লিখে রাখতে পারেন। নিজের চিন্তা কয়েক লাইনে লেখতে পারেন, ও লিংকটা সংযুক্ত করে রাখতে পারেন।
কী কী রাখতে পারেন?
খুব বেশী পার্সোনাল তথ্য, যেগুলি নিরাপত্তার সাথে জড়িত, সেসব নোটবুকে না রাখা ভালো। কারণ যেহেতু বিভিন্ন ডিভাইস থেকে ব্যবহার করতে হবে, এবং হাতের কাছে রাখতে হবে, তাই কেবলমাত্র নলেজ, আইডিয়া, আগ্রহ, প্রজেক্ট, নিজের ইনসাইট সম্পর্কিত বিষয়গুলাতে ফোকাস দেয়া বেটার।
নোটবুকে রাখতে পারেন কোন লেখার অংশ, কুওট, পডকাস্ট শুনতে শুনতে ভালো লেগে যাওয়া কোন চিন্তা, ইনসাইট, নিজের চিন্তা, হুট করে ধরতে পারা কোন এক বিষয়, লিংক, ভিডিও, ওয়েব ক্লিপিং, অডিও, পিডিএফ, ইমেজ ইত্যাদি। প্রায় সব নোট টেকিং এপেই অনেক অপশন থাকে। রেমনোট থেকে ছবি, সব অপশন আসে নি, পুরাটা ক্যাপচার করতে পারি নাই।
শেষাংশঃ
এই সেকন্ড ব্রেইন বা ব্যক্তিগত নলেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ইনফরমেশনের অভারলোড থেকে বাঁচাবে। এখন মানুষ অনেক জানে, কিন্তু কাজের কিছুই জানেনা না তার মনে হতে থাকে, ফলে এংজাইটি ফিল করে। সে ঠিক করতে পারে আবছাভাবে কেরিয়ারের জন্য বা অন্য কোন শর্ট টার্ম লক্ষ্যের জন্য তারে কী করতে হবে, কিন্তু কীভাবে করতে হবে বুঝতে পারে না। এর কারণ তার ফোকাস নাই। সে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে তার লক্ষ্য, প্রজেক্ট এবং এই সংশ্লিষ্ট তার জানাশোনার সমন্বয় করতে পারে না। ফলে, প্রতিবার এই বিষয়ে চিন্তায় তার ব্রেইনের উপরেই চাপ পড়ে, তারে মনে করতে হয় সব কিছু। মানুষের ব্রেইন স্মৃতিতে খুব ভালো না।
এইটা জানার সমস্যা না, নলেজ সিস্টেমরে অর্গানাইজ করতে না পারার সমস্যা, ফোকাসের সমস্যা।
একাডেমিক কাজ যারা করেন, যেমন রিসার্চ, বা যারা স্টুডেন্ট, তাদের জন্য সেকন্ড ব্রেইন অসাধারণ কাজে লাগবে। ডিস্ট্র্যাকশন এড়িয়ে দীর্ঘ সময় ধরে আগ্রহের জায়গায় ফোকাস দেয়া সম্ভব হবে এর মাধ্যমে।
প্রতিদিন সকালে বা সন্ধ্যায় আপনার রেমনোটের বা অন্য নোট টেকিং এপের সেকন্ড ব্রেইন চেক করবেন। যদি সম্ভব হয়, তাহলে এক ট্যাবে সব সময় খোলা রাখলেন। কনস্ট্যান্ট সামনে থাকলে, ও আইডিয়া সংগ্রহ ও অর্গানাইজ করা চালিয়ে যেতে থাকলে দ্রুতই টের পেতে থাকবেন কীভাবে আইডিয়াগুলারে কানেক্ট করতে পারছেন, ও ইউনিক ইনসাইট বের হচ্ছে।
অনেক উপকারী লেখা। কাজে লাগানোর চেষ্টা করবো। অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ